দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, বাঁকুড়া, ১৯ আগস্ট: বিধায়ক হওয়ার মাত্র চার মাসের মধ্যে স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে দলীয় কর্মী তথা নিজের গাড়ির চালকের সঙ্গে “পরকীয়া” এবং “বিয়ে” করার মারাত্মক অভিযো উঠলো শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি (Chandana Bauri)’র বিরুদ্ধে। চন্দনা সেই অভিযোগ অস্বীকার করলেও, তাঁর দলের স্থানীয় কর্মীরা তা স্বীকার করে নিয়ে, বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, বিধানসভার টিকিট পাওয়ার পর থেকেই সকলের নজরে ছিলেন চন্দনা বাউরি। কারণ, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া চন্দনাকে ভোটের ময়দানে দেখে কিছুটা অবাকই হয়েছিলেন সকলে। তবে দলের ভরসার সম্মান রেখেছিলেন তিনি। নির্বাচনের আগে ঝড়-জল উপেক্ষা করে মানুষের কাছে পৌঁছেছিলেন তিনি। ফলও পেয়েছেন। জিতেছেন চন্দনা। বিধায়ক হিসেবে সারা দেশের নজরেও পড়েছেন! আর এসবের মাত্র চার মাসের মধ্যেই তিন সন্তানের মা চন্দনা’র ‘বিবাহ বহির্ভূত’ সম্পর্ক প্রকাশ্যে চলে এলো। নিজের গাড়ি চালকের সঙ্গে পরকীয়া এবং বিয়ে নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি!
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে পালটাতে থাকে চন্দনার জীবনযাত্রা। অল্প সময়ের মধ্যে নিজের গাড়ির চালক কৃষ্ণ কুণ্ডুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বিধায়ক। জানা গিয়েছে, স্বামী ও সন্তানদের কথা চিন্তা না করেই, বুধবার রাতে লুকিয়ে ‘বিবাহিত প্রেমিক’ কৃষ্ণ’কে বিয়ে করেন চন্দনা। তারপর এক সঙ্গেই ছিলেন তাঁরা। কোনওভাবে বিষয়টি জানতে পারেন চন্দনার স্বামী শ্রাবণ বাউরি। কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে, গঙ্গাজলঘাঁটি থানায় যান তিনি। তবে, অভিযোগ দায়ের করেননি! এরপরই চন্দনা ও কৃষ্ণের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তাঁদের ডেকে পাঠানো হয় থানায়। বুধবার রাতেই “নবদম্পতি” (কৃষ্ণ এবং একমাথা সিঁদুর পরিহিতা চন্দনা) থানায় যান। সারা রাত থানাতেই ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে, থানাতেই সব মিটমাট হয়ে যায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে চন্দনা এবং তাঁর স্বামী শ্রাবণ একসাথে থানা থেকে বেরোন। এদিকে, বৃহস্পতিবার কৃষ্ণের স্ত্রী’ও পুলিশের দ্বারস্থ হন। তিনিও লিখিত অভিযোগ করেননি, তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার স্বামী কখনোই আমার কথা শোনেন না! তবে, চন্দনা যে এরকম কাজ করবে তা কখনও ভাবিনি।” এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন দলের নেতা-কর্মীরাও। প্রিয় নেত্রীর এহেন আচরণ মেনে নিতে পারছেন না কেউ! যদিও বিষয়টি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলেই দাবি চন্দনার। স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি জানিয়েছেন, “যে সব তথ্য আমার বিষয়ে রটানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অপপ্রচার। বিরোধী দলের তরফে এই ধরণের কুৎসা রটানো হচ্ছে। আমার পারিবারিক সমস্যা ছিল। তাই দু’জনে থানায় গিয়েছিলাম। থানায় মিটিয়ে এসেছি। আমি চিরকাল শালতোড়ার মানুষের সঙ্গেই থাকব। মানুষকে অনুরোধ এই কুৎসায় কান দেবেন না।” চন্দনার আরও অভিযোগ, “এর আগেও আমার নামে একাধিক অপপ্রচার চালিয়েছে বিরোধীরা। আমার নামে নিখোঁজ পোস্টার দেওয়া হয়েছে। আমার বেতন ৮৩ হাজার টাকা বলে গুজব রটানো হয়েছে। কিন্তু, এগুলি সবই মিথ্যে।” তবে, চন্দনা যাই বলুন না কেন, শালতোড়াবাসী তাঁদের বিধায়কের এই কান্ডখারখানায় মোটেও খুশি নন! এদিকে, বাঁকুড়া পুলিশ দ্বিতীয় বিবাহের ঘটনাটি সত্য বলে জানিয়েছে।