দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ জুন: “গাছগুলো তুলে আনো, বাগানে বসাও….আরোগ্যের জন্য ওই সবুজের ভীষণ দরকার!” আধুনিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এই ‘আহ্বান’ বিশ্ব-উষ্ণায়নের এই ভয়াবহ সময়ে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বাংলা কাব্যাকাশের দুই ‘দেদীপ্যমান নক্ষত্র’ রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণে মেদিনীপুরের স্বর-আবৃত্তি’ও তাই ‘সবুজের অভিযান’ দিয়েই অনুষ্ঠানের সূচনা করে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় ‘কলাভৃৎ’। প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের বুধবার (২৯ মে) মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে স্বর-আবৃত্তি, মেদিনীপুর ও কলাভৃৎ এর উদ্যোগে ‘কবি প্রণাম’ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। দুই সংস্থার দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী এতে অংশগ্রহণ করে। রবীন্দ্র নজরুল নৃত্য, একক ও দ্বৈত কবিতার সমাহারে সেজে উঠেছিল অনুষ্ঠান। তবে, তার আগে ২৫-শে বৈশাখ, রবীন্দ্র-জয়ন্তী উপলক্ষে বাচিক শিল্পের স্বনামধন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘স্বর-আবৃত্তি, মেদিনীপুরের’-র শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী বৃক্ষরোপণ ও আবৃত্তি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ‘কবি প্রণাম’- এ অংশ নেয়। প্রায় একশোর কাছাকাছি গাছ লাগায় ছাত্র-ছাত্রীরা।
স্বর -আবৃত্তি, মেদিনীপুরের কর্ণধার শুভদীপ বসু জানান, “আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা কবি প্রণামের উদ্দেশ্যে প্রত্যেকেই একটি গাছকে বড় করার সংকল্প নিয়েছে। কেউ থাকে ব্যাঙ্গালোরে, কেউ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। ৫ থেকে ৭৫ এর সদস্য-সদস্যারা গাছ লাগিয়ে পরিবেশকে শুভ্র রাখার সংকল্প নিয়েছে।” এরপর, দুই সংস্থার তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘কবি প্রণাম’ আয়োজিত হয় গত ২৯ মে, বুধবার। চারা গাছে জল সিঞ্চন ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ করেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক তারকনাথ সাহু, নিবেদিতা ভট্টাচার্য এবং সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেন ঘোষ।
আবৃত্তির কোলাজ ‘ছোটদের নজরুল’, ‘রবি ঠাকুরের মা’ ও ‘অন্য রবীন্দ্রনাথ’ সকলের নজর কাড়ে। ক্ষুদে শিল্পীদের নানা অনুষ্ঠান সকলের মন ছুঁয়ে যায়। গত ২৫-শে বৈশাখ অনলাইন মাধ্যমে আয়োজিত বৃক্ষরোপণ ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা ওপর নানা পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে। পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক নির্মলেন্দু দে, নাট্যকর্মী দীপক বসু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে পলি পাহাড়ি ,শিলা মহাপাত্র শিবানী পাল, সুপর্ণা ব্যানার্জি, সুপর্ণা কোলের গীতাঞ্জলির নির্বাচিত কবিতা অন্য স্বাদ এনে দেয়। ‘কলাভৃৎ’ এর কর্ণধার শ্রী অজয় সাহু বলেন, “দুই সংস্থার উদ্যোগে একটি মনোরম সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপহার দিতে পেরে আমরা খুশি।” অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্বর-আবৃত্তি’র পক্ষে দীপা বসু ও মনীষা বসু।