দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ আগস্ট: “২০ টি থানাতে মোট ৬০ টি সার্চ টিম গঠন করা হয়েছিল। প্রতিটি টিম খুব ভালো কাজ করেছে। রবিবার রাতের মধ্যেই মোটা রাজার ৩ সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র (পিস্তল) ও তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ তাদের আদালতে তোলা হবে। ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদনের করা হবে”। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) অম্লান কুসুম ঘোষ এবং এসডিপিও (SDPO) দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুরো অভিযান-টি সফল হয়েছে বলে এসপি জানিয়েছেন। এছাড়াও, ডেবরা থানা, কোতোয়ালী থানা, খড়্গপুর টাউন, খড়্গপুর লোকাল প্রভৃতি থানার আই.সি-ও.সি সহ পুরো টিমকে কৃতিত্ব দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। গ্রেফতার হওয়া ৩ কুখ্যাত অপরাধী হল- সৌরভ ঘোষ, সাহিল ঘোষ ও ধীমান ঘোড়ই। অভিযুক্ত তিনজনের কাছ থেকে তিনটি দেশি বন্দুক, ১২ রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ২৬ কেজি মাদকদ্রব্য এবং সঙ্গে থাকা মোটর বাইকটি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবার রাত্রি আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে মেদিনীপুরের ধর্মা ও মহতাবপুরে মোটা রাজা’র টিম গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল শহরজুড়ে! ঘটনার মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে মোটা রাজা (ওরফে, সুমন সিং) কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গতকাল তার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। গতকাল রাতেই গ্রেফতার করা হয় তার বাকি তিন সঙ্গীকে। সঙ্গে দাঁতনের নাকা চেকিংয়ে আরও তিন দুষ্কৃতীকে (দুই পুরুষ ও এক মহিলা) গাঁজা এবং একটি ইন্ডিকা গাড়ি সমেত গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। আর, এই ঘটনায় “জেলা পুলিশ”কে ‘কৃতিত্ব’ দিয়েছেন শাসকদলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। তিনি জানিয়েছেন, “মেদিনীপুর শান্তি ও শৃঙ্খলার শহর। কোনভাবেই দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এই ঘটনায় পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায়, পুলিশের পুরো টিমকে ধন্যবাদ জানাই। তবে, ভবিষ্যতে পুলিশকে আরো সতর্ক থাকার আবেদন জানাব।” এদিকে, মেদিনীপুর শহরে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, “পুরো রাজ্যে গুলি-বারুদের উপর বসে আছে। এখন দেখছি শান্তির শহর মেদিনীপুরও দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। পুলিশের কোন কৃতিত্ব নেই! সিসিটিভি ফুটেজ ছিল বলেই পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরতে পেরেছে। পুলিশের ভাবা উচিত, এত নাকা চেকিং থাকা সত্ত্বেও কিভাবে শহরে দাপিয়ে বেড়াল দুষ্কৃতীরা।” তিনি এও অভিযোগ করেছেন, “পুরভোটের আগে শহরবাসীকে আতঙ্কিত করতেই শাসক দলের মদতে দুষ্কৃতীরা শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।” অভিযোগ উড়িয়ে শাসক দলের জেলা সভাপতি বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস কোনদিন দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দেয়নি। এই দুষ্কৃতীরা কোথাও-কোনোভাবে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত, প্রমাণ করে দিলে দিলীপ বাবুর কথা মেনে নেব।”