দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ ডিসেম্বর: কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনে বিজেপি’র ভরাডুবি একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেছে। তারমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপি-কে লজ্জায় মুখ ঢাকতে হচ্ছে অন্য একটি কারণে! খড়্গপুরের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তৃষা চাকলাদারের অভিযোগে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হল বিজেপির উত্তর মন্ডল সভাপতি দীপসোনা ঘোষ-কে! তাঁর বিরুদ্ধে ‘কু-প্রস্তাব’ দেওয়া এবং ‘শ্লীলতাহানি’ করার মতো মারাত্মক অভিযোগ করেছিলেন তৃষা। গত ২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) অভিযোগ দায়ের করেছিলেন খড়্গপুর টাউন থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আজ সকালে টাউন থানার পুলিশ গ্রেফতার করল দীপসোনা-কে।
ঘটনার সূত্রপাত, গত ২ ডিসেম্বর বিধায়ক হিরণময় চট্টোপাধ্যায়ের একটি শীতবস্ত্র প্রদান কর্মসূচিকে ঘিরে। শহরের সুভাষপল্লী এলাকায় ওই কর্মসূচি সম্পন্ন করে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার ঠিক মুখে ফিরে যান বিধায়ক হিরণ। আর, তাঁর চলে যাওয়ার ঠিক পরেই, তাঁর অনুগামী হিসেবে পরিচিত মহিলা নেত্রী তৃষা চাকলাদার ও একাধিক বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি’র উত্তর মন্ডল সভাপতি দীপসোনা ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। তৃষা জানিয়েছিলেন “দীপসোনা ঘোষ, কুনাল সরকার, অঙ্কিত শর্মা প্রমুখরা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছেন, বিধায়কের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম বলে। শারীরিকভাবেও নিগ্রহ করা হয়েছে। এমনকি খুন করার চেষ্টাও হয়েছে। আমাদের দলীয় কার্যকর্তারা তা রুখে দিয়েছেন বলে বেঁচে ফিরলাম।” কিন্তু কেন? তৃষার মারাত্মক অভিযোগ ছিল, “এর আগে কু-প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাতে রাজি হইনি। একটা আক্রোশ ছিলই। এদিন সকালেও ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, যাতে বিধায়কের অনুষ্ঠানে না যাই। গিয়েছিলাম বলেই আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে দীপসোনা ঘোষ বলেছিলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওখানে একটা গন্ডগোল চলছিল। আমরা কয়েকজন গিয়ে তা মিটিয়ে দিয়েছি। বিধায়কের অনুষ্ঠানে যে কেউ যেতে পারে তা নিয়ে বলার কিছু নেই”। আর, ওই ঘটনা নিয়ে বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় ক্যামেরার সামনেই জানিয়েছিলেন “এটা সমাজবিরোধীদের কাজ। দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। আর, এইসব দুষ্কৃতীরা বিজেপির কর্মী হতেই পারে না! ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীরা, নরেন্দ্র মোদির সমর্থকরা এইসব কাজ করতেই পারে না! পুলিশকে অবিলম্বে বলবো এই সমাজ বিরোধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। খড়্গপুর থেকে সমাজবিরোধীদের বিতাড়িত করতে হবে। খড়গপুর শহর সাধারণ মানুষের জন্য, দুষ্কৃতীদের জন্য নয়”! বলার অপেক্ষা রাখে না, স্বয়ং বিজেপি বিধায়ক পরোক্ষে দীপসোনা’র গ্রেফতারিই চেয়েছিলেন।