তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জানুয়ারি: সংবাদ সংগ্রহ করা এবং তা সাধারণ মানুষের কাছে পরিবেশন করাই সংবাদমাধ্যমের কাজ। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করেও বছরের ৩৬৫ দিন সাংবাদিকরা নিজেদের কর্তব্য পালন করে চলে। তাই, ভারতবর্ষের ইতিহাসে সংবাদমাধ্যমকে ‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ’ বলা হয়! তা সত্ত্বেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের দ্বারা সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের বারবার আক্রান্ত হতে হয়েছে এবং হচ্ছে। শনিবার (৮ জানুয়ারি) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালেও ঘটলো তেমনই এক ন্যক্কারজনক ঘটনা! ঘাটালের বালিডাঙ্গায় খবর করতে গিয়ে সাংবাদিক মনসারাম কর দুষ্কৃতীদের হাতে প্রহৃত হন। তিনি ঘাটালের ‘স্থানীয় সংবাদ’ পেপার ও ডিজিটাল মাধ্যমের পরিচিত এক সাংবাদিক। অবশ্য অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত ব্যবস্থা নেয় ঘাটাল থানার পুলিশ। শাসকদল ঘনিষ্ট দুষ্কৃতী গণেশ ঘোষ (হ্যাবলা)-কে গ্রেপ্তার করা হয় এবং রবিবার তাকে আদালতে তোলা হয়। ৭ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। প্রাথমিক চিকিৎসার পর আপাতত সুস্থ আছেন সাংবাদিক মনসারাম।

thebengalpost.net
স্থানীয় সংবাদের সম্পাদিকা তৃপ্তি পাল কর্মকারের সাথে মনসারাম কর :

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার ঘাটাল থানার বালিডাঙ্গায়। রাস্তা সংস্কারের কাজ হচ্ছিল।রাস্তার কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না দাবি তুলে স্থানীয়রা পথ অবরোধ করে। স্থানীয়দের ডাকে ওই সাংবাদিক খবর সংগ্রহ করতে যান। এলাকায় তৃণমূল আশ্রিত বলে প্রচারিত এক দুষ্কৃতী গণেশ ঘোষ সাংবাদিকের কাজে বাধা দান করে এবং বাঁশ দিয়ে বারবার আঘাত করে সাংবাদিক মনসারাম করকে। বুম, ক্যামেরা, মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয়। এই খবর প্রকাশিত হতেই মহকুমার সাংবাদিকরা ঘাটাল থানায় চলে আসেন এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন। ঘাটাল থানার ওসি দেবাংশু ভৌমিক দ্রুততার সাথে গণেশ ঘোষকে আটক এবং পরে গ্রেফতার করেন। রবিবার গণেশ-কে ঘাটাল আদালতে তোলা হলে, আদালত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনায় ঘাটাল সহ সারা রাজ্যের দল-মত নির্বিশেষে মানুষ ধিক্কার জানিয়েছেন। বেশিরভাগ মানুষই মনে করছেন দুষ্কৃতীরা দুষ্কৃতীই, তারা যে দলের ছত্রছায়াতেই থাকুক না কেন! রাজনৈতিক মহল মনে করে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়াই নীচু স্তরের এই ধরনের অতি উৎসাহী কর্মীরা এই কাজ করে থাকে। দলমত নির্বিশেষে সকলেই চান, সাংবাদিকদের কাজে যারা বাধা দেয়, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই হওয়া উচিত।

thebengalpost.net
বাঁশ দিয়ে মারা হচ্ছে মনসারাম-কে :