নবীন কুমার ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ আগস্ট: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের অন্তর্গত চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের এল্ল্যাবনী, উপরডাঙা, দেউলডাঙ্গা, সাগড়িয়া, ধজিধরা গ্রামগুলি কংসাবতী নদীর একেবারে কূলে অবস্থিত। সেই নদীর বুক জুড়ে বৈধ ও অবৈধভাবে সারা বছর ধরে চলে খননকার্য বা বালি উত্তোলন। ক্রমেই নদী তার স্বাভাবিক গতিপথ হারাচ্ছে। সেই সঙ্গে নদীর “নদীর দু’কূল ভাঙা” টানা বৃষ্টিতে এলাকার কৃষিজমি, ঘরবাড়ি সব নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীরা জানালেন, গত কয়েকদিনে প্রায় ৪০ বিঘা কৃষি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে (এবং, গত দশ বছরে প্রায় ৫০০ বিঘা); নদী তীরবর্তী মাঠ-রাস্তাঘাট-গাছপালাও গেছে নদীর পেটে। নদী তীরবর্তী ঘরবাড়ি-তে ভাঙন চলছে। আশঙ্কায় দিন কাটছে এলাকাবাসীর। এদিকে, গত প্রায় তিন-সাড়ে তিন বছর ধরে এলাকায় প্রায় সমস্ত ধরনের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড বন্ধ আছে! বন্ধ আছে, নদীপাড়ের ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটের সংস্কার সহ সবকিছুই। কারণ আর অন্য কিছুই নয়, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-বিভেদ! রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস থাকলেও, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের (২০১৮) পর থেকে চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্বে ছিল বিজেপি! ফল স্বরূপ উপর মহল আর নিচের মহলের সমন্বয়ের অভাব আর রাজনৈতিক ফাঁসে আটকে থেকেছে এলাকার উন্নয়ন। ফল ভুগতে হয়েছে এলাকাবাসী’কে। তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর, চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েত টিও এবার দখল করার পথে তৃণমূল কংগ্রেস। অনাস্থা’র নোটিশ জারির অপেক্ষা শুধু! তারপরই হয়তো এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার আসবে বলে আশায় বসে আছেন এলাকাবাসী। এর মধ্যেই, চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্লাবিত এলাকাগুলিতে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে যথাসাধ্য ত্রাণসামগ্রী তুলে দিয়ে এবং সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে, তাঁদের আশ্বস্ত করলেন বিডিও সুদেষ্ণা দে মিত্র।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২-৩ বছরে কেন্দ্রীয় সড়ক যোজনা থেকে শুরু করে আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ, বিভিন্ন ভাতা ও প্রকল্প থেকে বঞ্চিত সদর ব্লকের নদী-তীরবর্তী মানুষগুলি। একদিকে বেহাল রাস্তা, অন্যদিকে বন্যা আর মহামারিতে জীবন-জীবিকার উপর বিপর্যয়; ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটছে এলাকাবাসীর! মেদিনীপুর লোকসভার বিজয়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষ তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এলাকাবাসী’কে কথা দিয়েছিলেন, নদী পাড় বাঁধিয়ে দেওয়ার বিষয়ে। কিন্তু, কোথায় কি! আজ ২ বছরে ওই এলাকায় তিনি একবারও যাননি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে, দেউলডাঙ্গা সংসদের ধজিধরা গ্রামের দশটি বাড়ি একেবারে নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার মুখে। স্থানীয় নেতৃত্ব ও ব্লক প্রশাসনের তদারকিতে কিছুজনকে সরিয়েও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েতের জটে রাস্তা মেরামতের কাজও শিকেয় উঠেছে। সগড়িয়ার বেহাল রাস্তা পুরোপুরি অকেজো। রাস্তা পারাপারের অসুবিধায় পড়েছেন এলাকার বহু মানুষ। এছাড়াও, নদী তীরবর্তী এল্ল্যাবনী সংসদ থেকে উপরডাঙা সংসদ পর্যন্ত রাস্তাও অকেজো। আবার, সেই রাস্তার উপর দিয়ে নদী পেরিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলার মানিকপাড়া যাওয়ার পথও এখন নদী গর্ভে! ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী। একম ভরসা নব নির্বাচিত বিধায়িকা জুন মালিয়া। তাঁর মুখাপেক্ষী হয়েই বসে আছেন এলাকাবাসী! এর মধ্যেই, কিছুটা আশার আলো ছড়িয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ওই সমস্ত এলাকায় পৌঁছে গিয়ে অসহায় ও দুঃস্থ এলাকাবাসীর হাতে কিছু নতুন বস্ত্র ও শুকনো খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছেন বিডিও সুদেষ্ণা দে মিত্র।
অন্যদিকে, উপরডাঙ্গা সংসদের শাসকদলের বুথ সভাপতি রুপক ঘোষ বলেন, “এল্ল্যাবনী থেকে উপরডাঙ্গা পর্যন্ত গ্রামীণ সড়ক যোজনার রাস্তা তৈরির জন্য জেলা পরিষদ’কে জানানো হয়েছে। কাজ খুব শীঘ্রই হবে। এই এলাকার সার্বিক উন্নয়নে আমাদের বিধায়িকাও খুব শীঘ্রই মনোযোগ দেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু, সাংসদ তো পুরোপুরি নিখোঁজ! তাঁর সাংসদ তহবিল থেকেও তো অনেক কাজ করা যেত এতদিনে।” যদিও বিজেপির এক স্থানীয় নেতা বললেন, “আমাদের সাংসদ’কে কোনো কাজ করতেই দিচ্ছেনা জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক তো উন্নয়নের বিষয়ে ওনার সাথে কোনো কথাই বলেন না! উনি নানা প্রস্তাব দিলেও, সেগুলি’র বিষয়ে ইচ্ছে করেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এই নোংরা রাজনীতি’র বলি হচ্ছেন এলাকাবাসী।” এদিকে, দেউলডাঙার তৃণমূল যুব নেতা প্রবীর রায় বলেন, “ব্লক প্রশাসন থেকে বিডিও পরিদর্শনে এসেছিলেন এবং পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান। শুধু দশটি বাড়ি নয়, আশেপাশে আরও অনেক বাড়ি রয়েছে, সেগুলোর বিষয়েও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উনি উল্লেখ করেছেন। রাস্তাঘাটের মেরামতের আবেদনও জানানো হয়েছে। সম্ভবত খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” শাসকদলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নয়ন দে বলেন, “বিডিও ম্যাডাম পুরো এলাকা পরিদর্শন করে যান। নদীর তীরে অবস্থিত যে ক’টি বাড়ি রয়েছে তাদের অন্যত্র ভূমি সহ বাড়ি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়াও, কচিকাঁচা ও বাচ্চাদের হাতে জামা কাপড় তুলে দেন।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…