মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ মে: মাঝখানে শুধু সোমবার। তারপর-ই (মঙ্গলবারের প্রশাসনিক বৈঠক) ঐতিহাসিক পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যটন মানচিত্রের নতুন এক ‘ইতিহাস’ উন্মোচিত হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। একদিকে, রাণী শিরোমণি’র কর্ণগড়, অন্যদিকে দাঁতনের মোঘলমারি বা বৌদ্ধবিহার। আছে, মন্দিরময় পাথরা কিংবা শহীদ ক্ষুদিরামের মোহবনি। ইতিহাস আর ঐতিহ্য, সৌন্দর্য আর প্রত্নতত্ত্ব মিলেমিশে একাকার। এছাড়াও, আছে এশিয়ার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গনগনি। মুখ্যমন্ত্রী’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে প্রতিটি দর্শনীয় স্থান-কেই সাজিয়ে তুলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। পর্যটনস্থল হিসেবে এই স্থানগুলিকে রাজ্যবাসীর হৃদয়ের অন্দরমহলে পৌঁছে দিতে একদিকে যেমন সেগুলিকে সংস্কার করা হয়েছে, ঠিক তেমনই প্রতিটি স্থানের ইতিহাস ও ঐতিহ্য-কেও তুলে ধরা হচ্ছে বিশ্বের আঙিনায়।
উল্লেখ্য যে, পরাধীন ভারতবর্ষের প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী তথা দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী রাণী শিরোমণির কর্ণগড়কে ইতিমধ্যে ‘স্টেট প্রটেক্টেড মনুমেন্ট’ বা প্রত্নতাত্ত্বিক মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে একধাপ এগিয়েছে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। অপরদিকে, হয়েছে সৌন্দর্যায়ন ও অভিনব কটেজ নির্মাণও। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তোবা রাণীর স্মৃতিধন্য পুরো গড়-টিকেই ‘হেরিটোজ জোন’ ঘোষণা করতে পারেন, এমনটাই আশা পশ্চিম মেদিনীপুর তথা কর্ণগড় (শালবনী বাসীর) বাসীর! অন্যদিকে, রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে ‘ট্যুরিস্ট সার্কিট’ হিসেবে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করতে চলেছে ঐতিহাসিক দাঁতন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের দিনকয়েক আগেই যেভাবে পর্যটন দপ্তরের সরকারী প্রতিনিধিরা দাঁতনের প্রতিটি ঐতিহাসিক ক্ষেত্র পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে গেছেন, তাতেই আশার আলো দেখছেন তখন দাঁতনবাসী। মোঘলমারীর প্রাচীন বৌদ্ধ মহাবিহার, রাজ্যের বৃহত্তম শরশঙ্কা দিঘি, মনোহরপুরের মোঘল আমলের রাজবাড়ি, চৈতন্য মহাপ্রভুর স্মৃতিধন্য কাকরাজিত ধাম এবং বাংলা-ওড়িশা সীমানায় চিরপ্রবহমান সুবর্ণরেখা নদীর অসাধারণ রিভার-সাইড ইকো-ট্যুরিজম পার্ক ও সংলগ্ন আকর্ষণীয় স্থানগুলি ঘুরে গেছেন আধিকারিকরা। তাই, দাঁতন নিয়েও যে মুখ্যমন্ত্রী নতুন কিছু ঘোষণা করতে পারেন, সেই আশাও দেখছেন জেলাবাসী।
অন্যদিকে, প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়েছে মেদিনীপুরের ‘অগ্নি কিশোর’ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর স্মৃতিধন্য পৈতৃক ভিটে (অনেকের মতে, জন্মভিটে) কেশপুর ব্লকের মোহবনী। ঠিক একইভাবে, গড়বেতার গনগনি, যা ‘এশিয়ার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ হিসেবে খ্যাত, সেখানেও সৌন্দর্যায়ন ও কটেজ নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়াও, ঐতিহাসিক পর্যটন স্থল রূপে খ্যাত এএসআই (Archeological Survey of India) অধিগৃহীত ‘মন্দিরময় পাথরা’-তেও প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যায়ন ও পার্ক নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। কংসাবতী নদী তীরবর্তী পাথরা’র রিভার ভিউ পয়েন্ট- যে জেলা ও রাজ্যবাসীর মন কেড়ে নেবে তা বলছে সংশ্লিষ্ট মহল। এই সমস্ত স্থানগুলিই পর্যটনস্থল হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। তবে, এর সাথে সাথে জেলাবাসী ও প্রশাসনের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একাধিক দাবি বা আবেদনও তুলে ধরা হতে পারে বলে জানা গেছে। বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের যে ভবনে অত্যাচারী জেলাশাসক ডগলাস-কে হত্যা করেছিলেন প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য এবং প্রভাংশু শেখর পাল, সেই ভবন-টিকেও ‘হেরিটেজ’ ঘোষণার জন্য আবেদন করতে পারেন জেলা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, “অনেক আগে থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কারণে তা এখনও সফল হয়নি। ইচ্ছে আছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তা তুলে ধরার।” ঠিক একইভাবে, কর্ণগড় ও রাণী শিরোমণি’কে স্বীকৃতি দেওয়ার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তীর্থঙ্কর ভকত, নিসর্গ নির্যাস মাহাত, তন্ময় সিংহ প্রমুখরা চাইছেন, পুরো কর্ণগড় ‘হেরিটেজ জোন’ ঘোষিত হোক এবং রাণী শিরোমণি পাঠ্যপুস্তকে স্থান পাক। ‘মন্দিরময় পাথরা’র প্রাণপুরুষ ইয়াসিন পাঠান আবার চান, “পাথরার ইতিহাস ও সৌন্দর্যায়ন বিশ্বের দরবারে পৌঁছে যাক, এটা যেমন আমাদের স্বপ্ন। ঠিক তেমনই জমিজট কাটিয়ে, কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে পাথরার মন্দির গুলি সংস্কারের বিষয়ে উদ্যোগ নিক কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসন। এএসআই অধিগ্রহণ করলেও, তাঁরা এখনও এই জট কাটিয়ে উঠতে পারেনি। মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন তিনি একবার বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নিন!” দাঁতনের বাসিন্দা, শিক্ষক ও গবেষক সন্তু জানা’র স্বপ্ন, “মনে হচ্ছে নতুন এক সন্ধিক্ষণের মুখে আমরা দাঁতনবাসী তথা সমগ্র পশ্চিম মেদিনীপুর বাসী দাঁড়িয়ে আছি!”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…