দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ সেপ্টেম্বর: দুর্বল সেতু। যেকোনো মুহূর্তে বড় বিপদ হতে পারে, তাই সাবধান করেছেন জাতীয় সড়ক ও পূর্ত দফতরের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররা। এরপরই, মেদিনীপুর-খড়্গপুরের সংযোগস্থলে কংসাবতী নদীর উপর দেশপ্রাণ বীরেন্দ্র সেতু বা মোহনপুর ব্রিজের উপর দিয়ে ৮ টনের বেশি ভার যুক্ত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ (১৯৮৮ সালের মোটরযান আইনের ১১৫ সেকশন অনুযায়ী) করে দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানী। তিনি জেলার দায়িত্ব নেওয়ার মোটামুটি এক-দু’ সপ্তাহের মধ্যেই এই কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তারপর-ও খবর আসছিল, গভীর রাতে ‘হাত বাড়িয়ে পুলিশকে দু-আড়াই হাজার দিলেই’ নাকি ৮ টন কেন, ১৮ টনের মালবাহী ট্রাক-ও পেরিয়ে যাচ্ছিল! খবর পৌঁছেছিল জেলাশাসক আয়েশা রানী’র কাছেও। ট্রাফিক পুলিশের একাংশের মদতেই নাকি ঘটে চলেছিল এই মারাত্মক অপরাধ! তাই, স্বচক্ষে বিষয়টি প্রত্যক্ষ করতে, হঠাৎ করেই তিনি গত ২২ আগস্ট (সোমবার) রাত্রি সাড়ে এগারোটা নাগাদ পৌঁছে যান মোহনপুর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়। মাত্র ১ জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ৬০ নং জাতীয় সড়কের উপর ধর্মা সংলগ্ন মোহনপুর ব্রিজে যখন পৌঁছন জেলাশাসক, সেই সময় ব্রিজের দুই পাশে সারি সারি দাঁড়িয়ে ট্রাক। যা ওই লাইনে আসার-ই কথা নয়! পুরো বিষয়টি জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায় জেলাশাসকের কাছে। তড়িঘড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ পৌঁছে তাঁকে যাই বোঝানোর চেষ্টা করুন না কেন, জেলাশাসক এই ঘটনায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ হন! পুলিশ আধিকারিক এবং মহকুমাশাসকের সামনে তিনি ঘোষণা করেন, “এই ব্রিজকে আমি মাঝেরহাট সেতু (২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সেতু ভেঙে কলকাতার বুকে ঘটে যাওয়া সেই বিপজ্জনক ঘটনা) হতে দেবোনা!”
এর পর দিন থেকেই, অবৈধ ও বেআইনি কাণ্ডকারখানা বন্ধ হয়। মেদিনীপুর শহরের ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিকের বদলিও হয়। ট্রাফিকের নতুন আধিকারিক এবং কোতোয়ালি থানার পুলিশ নড়েচড়ে বসে। এদিকে, জেলাবাসীর কাছে ওইদিন থেকেই ‘নয়নের মণি’ হয়ে উঠেছেন আয়েশা রানী। তাঁর এই উদ্যোগ-কে সাধুবাদ জানিয়েছে দলমত নির্বিশেষে সকলেই। শাসকদলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি-তো স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমরা গর্বিত জেলাশাসকের এই পদক্ষেপের জন্য।” বিজেপি’র মুখপাত্র অরূপ দাস-ও জেলাশাসকের পদক্ষেপ-কে স্বাগত জানিয়েছিলেন। মাঝখানে দু’একদিন আগে যদিও ট্রাক মালিক-রা দাবি করছিলেন, “শুধু ট্রাক-ই বন্ধ করা হয়েছে। যাত্রীবাহী বাস সহ অন্যান্য ভারী যানবাহন তো চলছে দিনের বেলায়!” তবে, ট্রাক মালিকদের সেই দাবি বা অভিযোগে কর্ণপাত করেননি জেলাশাসক আয়েশা রানী। তাঁর মতে বা জেলা প্রশাসনের মতে, এই ব্রিজ ছাড়া সড়কপথে মেদিনীপুর-খড়্গপুর সহ দুই মেদিনীপুরের মধ্যে বা কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় প্রায় নেই! সেক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ যাত্রী সাধারণ চরম অসুবিধায় পড়বেন। তাই, জনস্বার্থেই যাত্রীবাহী বাস চলাচল এখন-ই বন্ধ করা সম্ভব নয়। বরং, যতদিন না খোলনলচে সেতুর সংস্কার হচ্ছে বা পাশেই নতুন সেতু তৈরি হচ্ছে ততদিন মালবাহী ট্রাকগুলিকে ১০-১২ কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুরপথে যাতায়াত করতেই হবে! তুলনামূলক সময়সাপেক্ষ বা খরচসাপেক্ষ হলেও, বৃহত্তর জনস্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বেআইনিভাবে অন্যান্য ভারি যানবাহন বা ৮ টনের বেশি ওজনের যানবাহন যাচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য ইতিমধ্যে ব্রিজের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে। স্বয়ং জেলাশাসক এবার তাঁর অধীনে থাকা কন্ট্রোল রুম থেকেই যাতে নজরদারি চালাতে পারেন, সেজন্যই এই পদক্ষেপ বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এই পদক্ষেপ-কেও সাধুবাদ জানিয়েছেন আপামর শহরবাসী!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২২ নভেম্বর: আইআইটি (IIT)-র মতো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে অভাব…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ নভেম্বর: দোকান বন্ধ করে রাতেই বেরিয়েছিলেন বাইক নিয়ে।…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…