দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ জুলাই: সাতসকালেই ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! সাইকেলে করে নিজের বাড়ি থেকে বাজার করতে বেরিয়ে, নিয়ন্ত্রণহীন ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হয়ে গেলেন মধ্যবয়স্ক যুবক। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার বড়িষা অশ্বত্থতলা বাজারের কাছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পিংলা থানার জলচক ১০ নং অঞ্চলের জঁহাট গ্রামের যুবক শুভেন্দু সাহু (বয়স- ৪৪ বছর) এদিন সকালে বাজার করতে বেরিয়ে ছিলেন সাইকেলে করে। জলচকের দিক থেকে বলাইপন্ডার দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। এর মাঝেই বড়িষা অশ্বত্থতলা বাজারের কাছে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে! এক প্রত্যক্ষ্যদর্শী জানান, “ওই জায়গাতে রাস্তার ঠিক পাশেই পড়ে থাকা কাঠ লোড হচ্ছিল মেসিনভ্যানে। ফলে এমনিতেই সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছিল রাস্তাটি। সেই সময়ই সাইকেলে করে জলচকের দিক থেকে উনি আসছিলেন। ডাম্পারটি উল্টো দিক থেকে অর্থাৎ বলাইপন্ডার দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসছিল। বালি ভর্তি ১০ চাকা ডাম্পারের ধাক্কায় শুভেন্দু বাবু রাস্তাতেই পড়ে যান, আর ওনাকে পিষে দিয়ে চলে যায় ডাম্পারটি!” ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তরতাজা যুবক শুভেন্দু সাহু’র। পিংলা থানার পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে। ঘাতক গাড়িটিকে ময়না থানা আটক করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে, এই ঘটনায় মাথায় যেন বাজ পড়ে শুভেন্দু’র পরিবারে! তাঁর স্ত্রী, ক্লাস সেভেনে পড়া ১২-১৩ বছরের ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন। ক্যাজুয়াল স্টাফ হিসেবে জল পরীক্ষকের কাজ করত শুভেন্দু। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে অসহায় পড়ে পরিবার!

thebengalpost.in
ঘটনাস্থলে মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া :

এদিকে, এই খবর পৌঁছনোর পরই অবশ্য সবংয়ের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভূঁইয়া, প্রাক্তন বিধায়ক গীতা রানী ভূঁইয়া সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা বিকেল নাগাদ শুভেন্দু’র বাড়িতে পৌঁছন। শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া জানান, “মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশের কোনো ভাষা নেই! তবে, আমরা পরিবারের পাশে দাঁড়াতেই এসেছি। ক্লাস সেভেনে পড়া শুভেন্দু’র ছেলে গোপালের পড়াশোনার দায়িত্ব আমরা দলীয়ভাবে নিলাম। এছাড়াও, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা তাঁর স্ত্রী’র হাতে আপাতত ৫০ হাজার টাকা তুলে দিলাম।” এছাড়াও, পিংলা পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে ৭ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। অপরদিকে, ছেলে গোপালের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার সাথে সাথে, শুভেন্দু’র অস্থায়ী কাজটি (পঞ্চায়েত সমিতির জল পরীক্ষক) যাতে তাঁর স্ত্রী পায়, সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। একইসাথে, রাজ্য সড়ক বা জাতীয় সড়কের পাশে যাতে এইভাবে জিনিসপত্র ফেলে রাখা বা লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজ না হয়, সেদিকেও প্রশাসনের নজর দেওয়ার কথা বলেন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া। এদিন, তাঁর সাথে প্রাক্তন বিধায়ক গীতা রানী ভূঁইয়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- এসডিও আজমল হোসেন, এসডিপিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য, সিআই কৃষ্ণেন্দু হোতা, ওসি (পিংলা) শঙ্খ চ্যাটার্জি, পিংলা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সেক সবেরাতি, সবং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অমল পন্ডা, পিংলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বীরেন মাইতি, প্রানী ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আবুকালাম বক্স প্রমুখ।

thebengalpost.in
পরিবারের পাশে থাকার বার্তা :