দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ ফেব্রুয়ারি: কারও বাবা নেই। লোকের বাড়িতে কাজ করে মা সংসার চালান। কারও আবার বাবা-মা দুইই নেই। আত্মীয়-পরিজনদের কাছে মানুষ। বাড়িতে অর্থাভাব। সামাজিক অনুষ্ঠান করে বিয়ে দেওয়া তো দূরের কথা, বিয়ে দেওয়ার সামর্থ্যটুকুও নেই! তাঁদের কথা ভেবেই, আজ থেকে ১৪ বছর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের ‘বেলদা ক্লাব’ প্রথম গণবিবাহের আয়োজন করে। ধীরে ধীরে সেই পরিসর বেড়েছে। চলতি বছর, বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ১৫ জোড়া পাত্র-পাত্রীর বিয়ে দেওয়া হল। গত বছর (২০২৪) ১৩ জোড়া পাত্র-পাত্রীর বিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানান ক্লাবের সদস্যরা।
![thebengalpost.net](https://www.thebengalpost.net/wp-content/uploads/2024/12/IMG-20241209-WA0096.jpg)
শুধু বিয়ে দেওয়াই নয়, নবদম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় সমস্ত আসবাবপত্র থেকে সেলাই মেশিন। বেলদা ক্লাবের তরফে, রাজু চান্ডক, দুলাল দে, সুজিত চক্রবর্তী প্রমুখ বলেন, “ওঁরা যাতে বিয়ের পর স্বনির্ভর হতে পারে। সেজন্যই সেলাই মেশিন উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।” বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে একসঙ্গে ১৫ জোড়া যুগলের বিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার রাতে বেলদা ক্লাব সংলগ্ন মাঠে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান ১৫ জোড়া পাত্র-পাত্রীর বিয়ে দেখার জন্য। ব্যান্ড বাজিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার পর আয়োজন করা হয় গণবিবাহের। সাক্ষী থাকলেন হাজার হাজার মানুষ। হিন্দু ধর্মের সমস্ত রীতি-রেওয়াজ মেনে বৈদিক মন্ত্র পাঠ করে, কন্যা সম্প্রদান, শুভদৃষ্টি, মালা বদল, সিঁদুর দানের মধ্য দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয় ১৫ জোড়া যুবক-যুবতীর।
ক্লাবের সদস্যরা বলেন, “অসহায় বাবা-মায়েদের পাশে দাঁড়াতে ১৪ বছর আগে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত বছর ১৩ জোড়া পাত্র-পাত্রীর বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবারও, অসংখ্য সহৃদয় ও শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষজনদের সহায়তায় দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের পিছিয়ে পড়া এলাকার ১৫ জোড়া যুগলের বিয়ে দিয়েছি আমরা।” গণবিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট। তিনি বলেন, “এই ধরনের মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ না জানিয়ে পারা যায় না। এই ধরনের উদ্যোগের পাশে আগেও ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকব।”