দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১০ জানুয়ারি: আইআইটি খড়্গপুরের (IIT Kharagpur) রসায়ন বিভাগের জুনিয়র টেকনিশিয়ানের (জুনিয়র ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টের) ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য! শুক্রবার সকালে আইআইটি ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা ওই কর্মীর কোয়ার্টার থেকেই মৃতদেহ উদ্ধার করে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। মৃতের নাম সাকির আলি মোল্লা। বয়স ৩০। বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার অধীন সামালি এলাকায়। চাকরি সূত্রে (গত ২০২২ সাল থেকে) থাকতেন খড়্গপুর আইআইটি’র কোয়ার্টারে। আইআইটি সূত্রে খবর পাওয়ার পর, শুক্রবার সকালে ক্যাম্পাসে পৌঁছে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিকেল নাগাদ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে। শুক্রবার সকালে আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে খবর দেওয়ার পর কলকাতা থেকে পৌঁছন সাকির আলির মা সাকিলা বিবি, দিদি ফাতিমা বিবি, কাকু সাহাজুল আলি মোল্লা সহ পরিজনেরা।

thebengalpost.net
সাকির আলি মোল্লা:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):

খড়গপুর টাউন থানা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে বিষ্ণুপুর থানায় মেল করে এবং ভয়েস রেকর্ড পাঠিয়ে সাকির আলি মোল্লা জানিয়েছেন, নিজের আত্মীয় স্বজন সহ নানা জায়গা থেকে অনেক টাকা ধার করে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন অর্থাৎ সেই টাকা ডুবে গিয়েছে। এখন তিনি অসহায়! আর সেজন্যই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। পুলিশের তরফে এই মর্মে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও, মৃতের মা সাকিলা বিবি এদিন খড়্গপুরে পৌঁছে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত্রি ৯টাতেও ভালোভাবে কথা হয়েছে ছেলের সঙ্গে। কি খাবে জিজ্ঞেস করাতে বলে, রুটি আর গুড় খাবো। তারপর ও কিভাবে সুইসাইড করতে পারে?” অন্যদিকে, সরাসরি খুনের অভিযোগ এনেছেন মৃতের কাকা সাহাজুল আলি মোল্লা। তিনি বলেন, “গতকাল রাতেও আমার ভাইপো ওর বাবা-মায়ের সাথে ভালোভাবে কথা বলেছে। তারপর সুইসাইড করতে পারেনা! আমাদের মনে হচ্ছে, বাইরে থেকে দুষ্কৃতীরা এসে ওকে খুন করেছে। আর তার আগে ওকে দিয়ে জোর করে এসব লিখিয়ে নিয়েছে। তারপর ওকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে!” যদিও, তাঁরা (পরিবারের তরফে) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি এখনও! অন্যদিকে, এর আগেও আইআইটি খড়্গপুরের একাধিক পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু হয়েছে। ফের এক তরতাজা যুবকের তথা কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে।

thebengalpost.net
ময়নাতদন্তের পথে:

অন্যদিকে, শুক্রবার দুপুরেই মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হোস্টেলের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মৃতদেহ। জানা যায়, মৃতের নাম ক্ষুদিরাম সোরেন। বয়স আনুমানিক ৫৫। তিনি মেদিনীপুর কলেজের এই গার্লস হোস্টেলে, রাঁধুনির কাজ করতেন দীর্ঘদিন ধরে। শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ হোস্টেলের পেছনের দিকের শৌচাগারে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান হোস্টেলের অন্যান্য কর্মীরা। এরপরই তাঁরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। কলেজের তরফে জানানো হয় কোতোয়ালি থানাতে। কোতোয়ালি থানার তরফে বেলা দুটো নাগাদ দেহ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, মৃতের বাড়ি মেদিনীপুর শহরের হাঁসপুকুর এলাকায়। মৃতের স্ত্রী, সন্তান আছেন। এদিন গার্লস হোস্টেলে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতের স্ত্রী। ঠিক কি কারণে এই ঘটনা, তা এখনো জানা যায়নি। তবে, পুলিশের প্রাথমিক অনুমান পারিবারিক কোনো অশান্তির কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে এখনও অবধি কলেজ কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

thebengalpost.net
মেদিনীপুর কলেজের গার্লস হোস্টেলে:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (Advertisement):