দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ জুলাই: “বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী ছিলেন।” রবি ঠাকুর শুধু এখানেই থামেননি! বাংলার শিক্ষা ও সমাজ জগতের ‘ঈশ্বর’ সম্পর্কে তাঁর অভিমত, “বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যভাষার উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সুবিভক্ত, সুবিন্যস্ত, সুপরিচ্ছন্ন ও সুসংহত করিয়া তাহাকে সহজ গতি ও কর্মকুশলতা দান করিয়াছিলেন।” বাংলা গদ্যের সেই সার্থক শিল্পী ও স্রষ্টা তথা ‘নবজাগরণের অগ্রদূত’ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৫-তম জন্মজয়ন্তীতে (২৬ সেপ্টেম্বর) তাঁকে বিশেষভাবে স্মরণ করতে উদ্যোগী হল তাঁর জন্মস্থান মেদিনীপুর (অধুনা, পশ্চিম মেদিনীপুর)। সম্প্রতি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা বিষয়ক স্থায়ী সমিতির বর্ধিত বৈঠকে জেলার প্রতিটি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘বীরসিংহের সিংহ শিশু’ তথা শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের প্রস্তাব গৃহীত হয় সর্বসম্মতভাবে। প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্বয়ং শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তথা প্রাক্তন শিক্ষক শ্যামপদ পাত্র। গত ২১ জুলাই জেলা পরিষদের শিক্ষা স্থায়ী সমিতির বৈঠকে তাঁর সেই প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় বলে বুধবার জানান শ্যামপদ।

thebengalpost.net
শালবনীর মাঝিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭৫-তম প্রতিষ্ঠা দিবসে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি উন্মোচিত হয়:

বুধবার তিনি এও জানান, ইতিমধ্যেই জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের কাছে সেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি এবং এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে ‘মেদিনীপুরের বীর সন্তান’ বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ। এক্ষেত্রে, জেলা পরিষদের তরফে স্কুলগুলিকে কিছু আর্থিক সাহায্য করা যায় কিনা তা আগামী শুক্রবারের (২ আগস্ট) বৈঠকে স্থির করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে, যে সমস্ত স্কুলে ইতিমধ্যেই বিদ্যাসাগর মূর্তি স্থাপিত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে নতুন করে আর মূর্তি বসানোর প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ। এদিন তিনি এও জানিয়েছেন, আগামী ১৫ আগস্ট অর্থাৎ দেশের ৭৮-তম স্বাধীনতা দিবসের দিন জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হতে পারে। বুধবার বিকেলে জেলা পরিষদে নিজের কার্যালয়ে জেলা পরিষদের ক্রীড়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র এও জানান, “এই জেলা পরিষদের সভাগৃহেই ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৩০ এপ্রিল অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসক ডগলাসকে হত্যা করেছিলেন মেদিনীপুরের দুই ‘বীর বিপ্লবী’ শহিদ প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য এবং শহিদ প্রভাংশু শেখর পাল। ‘ঐতিহাসিক’ সেই সভাগৃহের মূল ফটকের দুই পাশে এই দুই কিশোর বিপ্লবী তথা মেদিনীপুরের দুই বীর সন্তানের আবক্ষ মূর্তি বসানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।”

thebengalpost.net
শ্যামপদ পাত্র: