দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ এপ্রিল: পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে শুক্রবার মধ্যরাত অবধি রেলশহর খড়পুরে বেনজির লড়াই বিজেপি, তৃণমূলের মধ্যে! ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী। শেষমেশ পার্টি অফিসে তালা ঝোলালো প্রশাসন! খড়্গপুর পৌরসভার ৩২নং ওয়ার্ডের ছোটো আয়মা এলাকায় একটি পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত্রি ৯টা থেকে রাত্রি প্রায় ১টা পর্যন্ত তৃণমূল-বিজেপি-র মধ্যে বেনজির টানাটানি চলে। তৃণমূলের রাস্তা অবরোধ থেকে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের অবস্থান বিক্ষোভ সবকিছুই হয়। খড়্গপুর টাউন থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলের দখল নিলেও, ঘটনার মীমাংসা করতে কার্যত অসমর্থ হন! শেষ পর্যন্ত IC রাজীব পালের পরামর্শে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল সরাসরি কথা বলেন খড়্গপুরের মহকুমাশাসকের সঙ্গে। তাঁর হস্তক্ষেপেই আপাতত পার্টি অফিসে তালা ঝোলানো হয়! শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে, দু’পক্ষের বক্তব্য ও প্রয়োজনীয় নথির ভিত্তিতে ঘটনার মীমাংসা করা হবে বলে রাত্রি প্রায় ১টা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন অগ্নিমিত্রা।
উল্লেখ্য যে, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে ৩২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুকেশ হুমনে তৃণমূল থেকে পুনরায় বিজেপি-তে ফিরে যাওয়ার পরই এই ঘটনার সূত্রপাত! ২০২২ সালের পৌর নির্বাচনে বিজেপি-র টিকিটে জেতার মাত্র কয়েক মাস পরই মুকেশ তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। আর তাঁর হাত ধরেই ৩২নং ওয়ার্ডের বিজেপি পার্টি অফিসটিও হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিস! লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ফের তিনি বিজেপি-তে ফিরে আসেন (শুক্রবার)। এবার, তৃণমূলের পার্টি অফিস পুনরায় বিজেপি দখল করতে গেলেই গন্ডগোল বাঁধে। মুকেশের দাবি, “আমি যখন তৃণমূলে গিয়েছিলাম, সঙ্গে সঙ্গেই পার্টি অফিসও তৃণমূলের হয়ে গিয়েছিল। আমি এখন বিজেপি-তে এসেছি মানে এটা তো বিজেপি-র পার্টি অফিসই হবে। সব ক্ষেত্রেই তাই হয়েছে। খড়্গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান কল্যাণী ঘোষ থেকে রবিশঙ্কর পাণ্ডে, দলবদলের সঙ্গে সঙ্গেই পার্টি অফিসও (দখলদারিও) সেই দলেরই হয়ে যায়!” মুকেশ-কে সমর্থন করে অগ্নিমিত্রা বলেন, “আজ (শুক্রবার) থেকে মুকেশ আমাদের দলের কার্যকর্তা। এই জায়গাটা ওর। সুতরাং, ও যে দলে যাবে, পার্টি অফিস তো সেই দলেরই হবে। এতদিন তাই হয়েছে। কিন্তু, তৃণমূল এদিন গা-জোয়ারি শুরু করে! তাই আমি দাঁতনে শুভেন্দু’দার সভা সেরে এখানে পৌঁছে যাই। মুকেশের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের কর্তব্য।” অপরদিকে, তৃণমূলের তরফে পার্টি অফিস দখলে রাখার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া যুবনেতা অসিত পাল বলেন, “নির্বাচনের ঠিক আগে BJP আমাদের পার্টি অফিস এইভাবে দখল নেওয়ার চেষ্টা করতেই, আমরা প্রতিবাদ করেছি। শনিবার ঘটনার মীমাংসা করবেন SDO।” শেষমেশ পুলিশ-প্রশাসনের তরফে আপাতত ওই পার্টি অফিসে তালা ঝোলানো হয় বলে জানিয়েছেন দু’পক্ষই।