দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৩০ মার্চ: রেলে চাকরির টোপ দিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা! জাল বিছানো ছিল মেদিনীপুর, খড়্গপুর সহ প্রায় গোটা রাজ্য তথা ভিন রাজ্যেও। প্রতারণা চক্রের অন্যতম পান্ডা আবার খড়্গপুর ডিভিশনের সিনিয়র DOM (Senior Divisional Operations Manager) অফিসেই কর্মরত। অপর একজন ওই অফিসেরই প্রাক্তন কর্মী। এছাড়াও, এক মহিলা সহ এখনও পর্যন্ত তিন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে খড়্গপুর জিআরপি (Kharagpur GRP)। শনিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে খড়্গপুর জিআরপি-র এসআরপি (SRP) দেবশ্রী সান্যাল জানান, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা এই প্রতারণা চক্র সম্পর্কে জানতে পারি। এরপর, এক ‘প্রতারিত’ চাকরিপ্রার্থীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি। তারপরই গত ২৮ মার্চ আমরা খড়্গপুর থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছি।” ধৃত ৩ জন হলেন যথাক্রমে- খড়গপুরের সিনিয়র ডিওএম অফিসের কর্মী দুলভ চিনা (৪৯); ওই অফিসেরই প্রাক্তন কর্মী এম. কোটেশ্বর রাও (৬২) এবং সাবিনা খাতুন (৩৫) নামে এক মহিলা।
ধৃত তিনজন যথাক্রমে খড়্গপুর শহরের তারঝুলি, মালঞ্চ ও ইন্দা নিউ টাউন (এলআইসি) এলাকার বাসিন্দা বলে রেল পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তাদের খড়্গপুর শহর থেকেই RPF ও GRP-র যৌথ উদ্যোগে গ্রেফতার করা হয় বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে। শনিবারের (৩০ মার্চ) সাংবাদিক বৈঠক থেকে SRP দেবশ্রী সান্যাল এও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ধৃতদের আদালতে পাঠিয়ে ৬ দিনের রিমান্ডে (পুলিশ হেফাজতে) নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, এই চক্রের জাল বিছানো থাকতে পারে ভিন রাজ্যেও। ধৃতদের মোবাইল থেকে তেমনই তথ্য মিলেছে। আপাতত এই চক্রের ‘মূল পান্ডা’ কে বা কারা, তাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসআরপি সান্যাল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লোভনীয় বেতনের রেলের চাকরির টোপ দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ইনস্টলমেন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ এসেছিল রেল পুলিশের কাছে। এরপরই প্রাথমিক তদন্তে এই প্রতারণা চক্রের বিষয়ে জানতে পারে রেল পুলিশ। তারপর প্রতারিত এক চাকরিপ্রার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, তদন্ত শুরু করেন খড়্গপুর জিআরপি এবং আরপিএফ আধিকারিকরা। তাতেই গ্রেফতার করা হয় তিন পান্ডাকে।
ধৃতদের কাছ থেকে অজস্র বায়োডাটা উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই, বেশ কিছু প্রতারিত চাকরিপ্রার্থী যোগাযোগ করেছেন রেল পুলিশের সাথে। রেল পুলিশ জানতে পেরেছে, ধাপে ধাপে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়া হতো। ফাঁদে পা দেওয়া চাকরিপ্রার্থীদের ভুয়ো মেডিক্যাল টেস্ট এবং ভুয়ো ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করা হতো। দেওয়া হতো ভুয়ো নিয়োগপত্র বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারও! এসআরপি দেবশ্রী সান্যালের আবেদন, “এইভাবে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন বলে মনে করছেন কিংবা ভুয়ো অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছেন বা চাকরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছেন; তাঁরা আমাদের সঙ্গে অবিলম্বে যোগাযোগ করুন।”