thebengalpost.net
মৃগেন্দ্রনাথ মাইতির আবক্ষ মূর্তি উন্মোচিত:

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ ফেব্রুয়ারি: তিনি শুধু জেলার বাম বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কান্ডারী কিংবা মেদিনীপুর বিধানসভার দু’বারের বিধায়কই ছিলেন না; রাজ্যের ডানপন্থী মনোভাবাপন্ন সরকারি কর্মচারীদের ‘নয়নের মণি’ও ছিলেন। প্রায় দু’দশকের বেশি সময় ধরে রাজ্য জুড়ে ডানপন্থী সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রয়াত মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি ওরফে মৃগেন মাইতি। রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কার্যালয়ের প্রতিষ্ঠাও হয়েছিল তাঁর হাত ধরেই। সেই কার্যালয়ের সামনেই বসল রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রয়াত মৃগেন্দ্রনাথ মাইতির আবক্ষ মূর্তি। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা শহর মেদিনীপুরের রবীন্দ্রনগর এলকায় অবস্থিত সংগঠনের কার্যালয়ের সামনে সেই আবক্ষ মূর্তির উন্মোচন করেন রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের বর্তমান চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ডাঃ মানস রঞ্জন ভুঁইয়া।

thebengalpost.net
মঞ্চে মানস, তখনও ঢুকছেন কর্মীরা:

শনিবার রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার ১ম জেলা সম্মেলন উপলক্ষেই প্রয়াত বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতির আবক্ষ মূর্তি উন্মোচিত হয়। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রয়াত হয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান, বিধায়ক ও MKDA চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭। বার্ধক্যজনিত রোগের কারণে ভর্তি ছিলেন কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন তিনি। মৃগেন্দ্রনাথ যেদিন মারা যান, দলীয় কর্মসূচিতে সেদিন মেদিনীপুর শহরেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। বিধায়কের মৃত্যুর খবর পেয়েই তাঁর বাড়িতে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দেখা করেছিলেন তাঁর পরিজনেদের সঙ্গে। সেদিন মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘আমার সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় মৃগেনদার। আদর্শবান মানুষ ছিলেন। মৃগেনদা ছাড়া মেদিনীপুর ভাবাই যায় না।’’ মুখ্যমন্ত্রী এও বলেছিলেন ‘‘মৃগেনদার মতো মানুষ আর তৈরি হবে কি না, আমি জানি না। মানুষটা দীর্ঘদিন ধরে দলকে সার্ভিস দিয়েছে। তাঁর আজীবন কাজ, দলের প্রতি তাঁর ভালবাসা, মানুষের জন্য তাঁর কাজ, সরকারি কর্মচারীদের জন্য তাঁর কাজ, মনে রাখার মতো। দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছি আমরা একসঙ্গে। আমরা কখনও অতীতকে ভুলি না।’’ মমতা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘মৃগেনদাকে কেন সম্মান দিচ্ছি? লোকটা লড়াই করেছে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে। মেদিনীপুরের মানুষ সবাই চেনেন তাঁকে। সারা বাংলার ফেডারেশনের কর্মচারীরা সবাই তাঁকে চেনেন। এ সব লোক আর ফিরে আসবে না।’’

thebengalpost.net
মিছিল সংগঠনের:

অন্যদিকে, শনিবার মূর্তি উন্মোচনের আগে শহরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে অনুষ্ঠিত কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে কর্মচারী ও জেলা নেতৃত্বদের মঞ্চ থেকেই কড়া ভর্ৎসনা করেন সংগঠনের রাজ্য চেয়ারম্যান তথা এদিনের অনুষ্ঠানের মূল বক্তা মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া। তিনি বলেন, “আপনারা হলে তাড়াতাড়ি ঢুকুন, নাহলে আমি দরজা বন্ধ করে দেব; কেউ ভেতরে ঢুকতে পারবেন না! এরা কারা? এরকম বিশৃঙ্খল সরকারি কর্মচারী আমি কোথাও দেখিনি! এরা কি সব মেছো মার্কেটের মেম্বার নাকি!” সংগঠনের জেলা সভাপতি শীতল বিদ সহ নেতৃত্বদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “শীতল বিদ, সুনীল বাবু (সুনীল কর), সুব্রত বাবু (সুব্রত সরকার)- এরা কারা? সারা রাজ্যে ঘুরে ঘুরে আমি সভা করছি এমন বিশৃঙ্খল কর্মচারী আমি কোথাও দেখিনি! কি সংগঠন চালাচ্ছেন? শীতল বিদ এরকম কুঁই কুঁই করে সংগঠন চালালে হবে না! এরকম চললে আমি সমস্ত সংগঠন ভেঙে দেব।” একইসঙ্গে মঞ্চের উপরে বেশি ভিড় করার জন্যও চরম ক্ষুব্ধ হন মানস। মন্ত্রী তাঁদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নামুন সবাই। নিচে গিয়ে বসুন। মঞ্চের বামদিকে যারা আছেন, ফাঁকা করুন। ডানদিকে যাঁরা আছেন তারাও যান। নিচে গিয়ে বসুন।” সূত্রের খবর, এদিন সভা শুরু হয়ে গেলেও, বেশিরভাগ কর্মচারী হলের বা প্রেক্ষাগৃহের বাইরে থাকার কারণেই রুষ্ট হন মানস রঞ্জন ভুঁইয়া। তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা এবং আশিস হুদাইত সহ অন্যান্য নেতৃত্বদের সামনেই তাই কর্মচারী ফেডারেশনের সদস্য এবং নেতৃত্বদের চরম ভর্ৎসনা করেন তিনি।

thebengalpost.net
মৃগেন্দ্রনাথ মাইতির আবক্ষ মূর্তি উন্মোচিত: