দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ জানুয়ারি: তৃণমূলের কার্যালয়ে তালা ঝোলালেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাই! কার্যালয়ের দেওয়ালে থাকা দলীয় ‘ঘাসফুল’ প্রতীকও মুছে দিলেন চুনের প্রলেপ দিয়ে। লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা পৌর এলাকায় ঠিক এভাবেই স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা! এর আগে, জেলা সদর তথা মেদিনীপুর পৌর এলাকাতেও প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। লোকসভার আগে ফের একবার তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন দু’দিন আগেই (৪ জানুয়ারি) গড়বেতা থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ-কেও। শুভেন্দু বলেছিলেন, “অজিত মাইতিকে পুলিশ রগড়াচ্ছে! মেদিনীপুরে চেয়ারম্যান সৌমেন খানকে সরাতে বসে পড়ছে তৃণমূলের কাউন্সিলররাই।”

thebengalpost.net
পড়ল তালা:

উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বোনা এলাকায় ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় থেকে শনিবার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা খুলে নেন দলীয় পতাকা। এমনকি যে দেওয়ালে তৃণমূল প্রতীক (ঘাসফুল) সহ কার্যালয়ের নাম লেখা ছিল, তাও তাঁরা চুন দিয়ে মুছে দেন। স্থানীয়দের দাবি, এই কার্যালয়ে ক’দিন আগেও বিধায়ক অরূপ ধাড়া থেকে শুরু করে কাউন্সিলর, ওয়ার্ড সভাপতি থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আনাগোনা ছিল। এমনকি সদ্য তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীষ্ঠা দিবসেও এই দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলীয় পতাকা তুলে গিয়েছিলেন চন্দ্রকোনা বিধানসভার বিধায়ক অরূপ ধাড়া। কিন্তু কেন এমন ঘটনা? ওয়ার্ড তৃণমুলের একাংশের দাবি, পৌর ভোটে জেতার পর থেকে এই কার্যালয়ে আসেন না কাউন্সিলর সুনিতা খাঁড়া! এমনকি, ওয়ার্ড সভাপতি অশোক মুখার্জীও আসেন না। এজন্য, চন্দ্রকোনা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ সাঁতরার দিকে ওয়ার্ডে ‘সমান্তরাল’ ভাবে সংগঠনের কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা তথা চন্দ্রকোনা-২ ব্লক এসসি সেলের সভাপতি বুদ্ধদেব দাস। শহর তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে ওয়ার্ড সভাপতি ও কাউন্সিলরদের নিয়ে ওয়ার্ডে আলাদা ভাবে দলের কাজকর্ম করারা অভিযোগ ও ওয়ার্ডে দলের মধ্যে বিভজনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন ব্লকের এসসি সেলের সভাপতি। তাঁর আরও অভিযোগ, “ওয়ার্ডের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানেন, কিন্তু মীমাংসার জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”

ঘটনায় পাল্টা ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে শুরু করে ওয়ার্ড সভাপতির দাবি, “কয়েকজন তৃণমূল কর্মী নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করছেন। প্রবীনদের সম্মান দিচ্ছেন না। তাই আমরা ওখানে যাইনা!” এই বিষয়ে শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা বলেন, “পার্টি অফিসের জায়গাটি ব্যক্তিগত মালিকানায়। জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে কাউন্সিলরের সাথে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। ওয়ার্ডের সকলেই তৃণমূল কর্মী। সকলে একসাথেই দলের কাজ করি।আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।” এনিয়ে যদিও বিজেপির তরফে তৃণমূলকে চরম কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, “এভাবেই নিজেদের মধ্যে খাওয়াখায়ী নিয়ে অশান্তি থেকে দলটাই শেষ হয়ে যাবে!”

thebengalpost.net
আগে:

thebengalpost.net
পরে :