দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর: “সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকেই নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। মেদিনীপুর শহরের সমস্ত শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্স, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, নার্সিংহোমগুলিকে নিজস্ব পার্কিং জোন গড়ে তুলতে হবে। নাহলে আমরা আপনাদের লাইসেন্স বাতিল করব।” আজ, রবিবার ঠিক এমন হুঁশিয়ারিই দিয়েছেন মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান। তিনি জানিয়েছেন, “সদ্য গড়ে ওঠা শ্রীলেদার্স সহ প্রতিটি শপিং মল ও মার্কেট কমপ্লেক্সকেই তাঁদের ক্রেতাদের জন্য পার্কিং জোন তৈরি করতে হবে। অথবা, যে পার্কিং জোন দেখিয়ে লাইসেন্স নিয়েছিলেন, তা ব্যবহারের যোগ্য করে তুলতে হবে। কোনোভাবেই তাঁদের ক্রেতাদের বাইক কিংবা চারচাকা যেন রাস্তার উপরে না থাকে, সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে। না হলে আমরা তাঁদের অনলাইনের লাইসেন্স বাতিল করব।” একইসঙ্গে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, নার্সিংহোমগুলিকেও অবিলম্বে পার্কিং জোন তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন পৌরসভার চেয়ারম্যান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জেলা শহর জুড়ে একের পর এক শপিং মল বা মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। একইসঙ্গে ফুটপাত দখল করেও চলছে ব্যবসা। এই পরিস্থিতিতে শহরের প্রধান রাস্তাগুলো দিন দিন ছোট হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে যানজট। তার সঙ্গে আছে হাজার হাজার অবৈধ টোটোর দাপট। ফলে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাই যেন দিন দিন দায় হয়ে উঠছে শহরবাসীর! এই পরিস্থিতিতে সমাজ মাধ্যমে সরব হচ্ছেন শহরের সচেতন নাগরিকবৃন্দ থেকে খোদ শাসকদলের নেতারাও। সম্প্রতি, রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক নির্মাল্য চক্রবর্তী সমাজমাধ্যমে লেখেন, “এই মার্কেট কমপ্লেক্স গুলো মেদিনীপুর শহরে ওপেন হচ্ছে বা হয়েছে, বেশ ভালো। কিন্তু, পার্কিং ছাড়াই! এতে তো সেই রাস্তার উপরে চারচাকা বা দু’চাকা বা টোটো দাঁড়িয়ে থাকবে, আর রাস্তা জ্যাম হবে। একেই শহরের প্রধান রাস্তা গুলো ছোটো হতে হতে ১৫-ফুটে এসে দাঁড়িয়েছে। আর কত নিচে নামবো আমরা?” নির্মাল্যর ওই পোষ্টে শহরের শতাধিক সচেতন নাগরিক কমেন্ট করে তাঁকে সমর্থন জানান। এরপরই চাপ বাড়তে থাকে পৌরসভার উপর!
অন্যদিকে, গত ১২ সেপ্টেম্বর মেদনীপুর শহরের কলেজ স্কোয়ার এলাকায় ফুটপাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক দোকানীর। গুরুতর জখম হন আরও ২ জন। শহরের কলেজ রোডের এই দুর্ঘটনায় তোলপাড় হয় গোটা জেলা। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে শুরু করে ফুটপাতের ওপর দোকান নিয়ে তৎপর হয় প্রশাসন ও পৌরসভাও। জেলা প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হয় বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে শুরু করে মেদিনীপুর পৌরসভাকে। এরপরই অভিযানে নামে মেদিনীপুর পৌরসভা। শনিবার মেদিনীপুর শহরের গান্ধী মোড় থেকে বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত শহরের রিং রোডে বা রাজপথে থাকা ফুটপাতের সমস্ত দোকানগুলিকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় পৌরসভার তরফে। রাস্তার ওপরে উঠে আসা ফল দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকানের জিনিসপত্র এক প্রকার ঠেলে ফেলে দেওয়া হয় পৌরসভার তরফে। দেওয়া হয় চরম সতর্কবার্তাও। যেভাবে দিন দিন শহরের রাস্তা সংকুচিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা বাড়ছে; তা রুখতেই যে এবার কড়া মেজাজে পথে নেমেছে পৌরসভা; তা বলাই বাহুল্য!