দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৭ আগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে ফের মেদিনীপুর যোগ! পশ্চিম মেদিনীপুরের পর এবার পূর্ব মেদিনীপুর। গত সপ্তাহের শুক্রবার (১১ আগস্ট) গ্রেফতার করা হয়েছিল ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার সৌরভ চৌধুরীকে। গতকাল অর্থাৎ বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে গ্রেফতার করা হয় পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাসিন্দা সপ্তক কামিল্যা-কে। সৌরভের মতো সেও প্রাক্তন ছাত্র। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে এগরার বাড়ি থেকে নিয়ে যায় কলকাতা পুলিশ। জানা যায়, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর পরই হোস্টেল থেকে বাড়িতে চলে আসে সপ্তক। সপ্তকের বাড়ি এগরার ৬ নং ওয়ার্ডে।
এদিকে, সপ্তক সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যথাক্রমে মঙ্গলবার ও বুধবার। এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় সব মিলেয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হল। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার সকালে সপ্তককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সপ্তক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। তিনি এগরার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সপ্তকের বাবা তাপস কামিল্যা স্বর্ণ ব্যবসায়ী। বুধবার তাঁদের বাড়ির দরজায় তালা ঝুললেও তাপসের সোনার দোকানটি (নলিনী কান্ত কামিল্যা) অবশ্য খোলা ছিল। দোকানে ভিড়ও যথেষ্ট ছিল। তাপসকে সেখানে পাওয়া না গেলেও দোকানের কর্মচারী কমল পাল জানান, গত সোমবারই কলকাতা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার পৈতৃক বাড়িতে ফিরেছিলেন সপ্তক। তাঁর কথায়, ‘‘সপ্তক গত পরশু (সোমবার) কলকাতা থেকে এগরার বাড়িতে ফিরেছিলেন। এর পর গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টা নাগাদ কলকাতার পুলিশের দল এগরা শহরে হানা দিয়ে সপ্তককে আটক করে নিয়ে যায়।’’ মঙ্গলবার বিকেলে সপ্তককে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তাপসকে এলাকায় দেখা যায়নি বলে প্রতিবেশীরা জানান। তাঁরা এও বলেন, পড়াশোনার সূত্রে দীর্ঘ দিন ধরেই কলকাতায় থাকেন সপ্তক। মাঝেমধ্যে বাড়ি আসতেন। দু-এক দিন থেকেই আবার ফিরে যেতেন। সুমন শেঠ নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘ছেলেটাকে ছোট থেকেই দেখছি। সত্যি ভাবতেই পারছি না!’’ পড়শিদেক একাংশের অনুমান, সম্ভবত ছেলের জন্যই কলকাতায় গিয়েছেন গৃহকর্তা (তাপস কামিল্যা) এবং তাঁর স্ত্রী।
এদিকে, বুধবার আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হল যথাক্রমে- জম্মুর বাসিন্দা মহম্মদ আরিফ, পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা আসিফ আফজল আনসারি, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা অঙ্কন সরকার, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানা এলাকার বাসিন্দা অসিত সর্দার, মন্দিরবাজারের সুমন নস্কর। আগেই গ্রেফতার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রাক্তনী’ পশ্চিম মেদিনীপুরের সৌরভ চৌধুরী, দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া তথা হুগলির আরামবাগের মনোতোষ ঘোষ এবং দ্বিতীয় বর্ষের আরেক পড়ুয়া তথা বাঁকুড়ার মাচানতলার বাসিন্দা দীপশেখর দত্ত। এই নিয়ে মোট ৯ জনকে গ্রেফতার হয়েছেন পড়ুয়া-মৃত্যুর ঘটনায়। বুধবার গ্রেফতার হওয়া ৬ জনকেই দুপুরে আলিপুর আদালতের হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।