দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ আগস্ট: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা এলাকার একটি মিষ্টি দোকানের দই খেয়ে অসুস্থ ওই এলাকার অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন। শুক্রবার দুপুর থেকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে অন্তত ১৫ জনকে। যদিও, রবিবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৭ জন। সকলেরই বমি, পেট খারাপ সহ ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ। এই তালিকায় আছেন শালবনী গ্রামীণ হাসপাতালের BMOH ডঃ কৌশিক সিং-ও। চন্দ্রকোনা এলাকার বাসিন্দা ডঃ সিং শুক্রবার দুপুর থেকে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে, রবিবার দুপুরের পর তিনি অনেকটাই সুস্থ বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, চন্দ্রকোনা গ্রামীন হাসপাতালে একই পরিবারের ৬ জন চিকিৎসাধীন আছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। যদিও, অপর একটি সূত্রে জানা গেছে বমি, পায়খানা সহ খাদ্যে বিষক্রিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন অন্তত ১০ জন। সংখ্যাটা আরো বাড়তে পারে বলেও অনুমান।
রবিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডক্টর সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানিয়েছেন, “একটি দোকানের দই খেয়ে এলাকার অনেকে অসুস্থ হয়েছেন বলে ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে আমরা গতকাল খবর পাই। তারপরই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই দইয়ের নমুনা পরীক্ষা করার জন্যও পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে যাঁরা ভর্তি আছেন, সকলের শারীরিক অবস্থাই এই মুহূর্তে স্থিতিশীল।” স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার খিড়কিবাজার এলাকার একটি নামকরা মিষ্টির দোকান (মনোলোভা সুইটস)- এর দই কিনে খেয়েছিলেন চন্দ্রকোনার একাধিক পরিবার। মূলত শুক্রবার সকাল থেকে যাঁরা দই কিনেছিলেন, তাঁরা কিংবা তাঁদের পরিবারের সদস্যরাই অসুস্থ হয়েছেন। গত দু’দিনে পেট খারাপ বা ডায়রিয়ার মতো উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন এলাকার অন্তত ২৫-৩০ জন। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে অন্তত ১৫ জনকে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বেশ কিছু জন এখনও চিকিৎসাধীন আছেন। আক্রান্তের তালিকায় শিশু, কিশোর, থেকে বয়স্করাও আছেন। তালিকায় আছেন শালবনীর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ কৌশিক সিং-ও। বছর ৩০’র ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক রবিবার ফোনে জানান, “শুক্রবার সকালে ওই দোকান থেকে দই কেনা হয়েছিল। বাড়িতে আমি, আমার বাবা এবং ভাই ওই দই খেয়েছিলাম। তারপর, আমি শুক্রবার শালবনীতে ডিউটিতে এসেছিলাম। দুপুরের পরই অসুস্থতা অনুভব করি। বমি সহ পেট খারাপের অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। শুক্রবার দুপুরেই শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাই। তবে, আমার বাবা এবং ভাই-কে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। শুনেছি শুক্রবারের দুপুরের পর থেকে ওই এলাকার অনেকেই অসুস্থ হয়েছেন।” চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালের BMOH ডঃ স্বপ্ননীল মিস্ত্রি শনিবার রাতেই সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, “সকলেই ওই মনোলোভা মিষ্টি দোকানের দই খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এখনও পর্যন্ত ৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে হচ্ছে।”