দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৭ মে: প্রদীপ-জমানার অবসানের পর খড়্গপুর পৌরসভার নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর কল্যাণী ঘোষ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযান চললো ‘রেলশহর’ খড়্গপুরে। পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার ঘনিষ্ঠ ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ. পূজা নাইডু তথা তাঁর স্বামী নিহত রেলমাফিয়া শ্রীনু নাইডু’র আত্মীয় ভি. শ্রীনু রাও ওরফে গুরুনাথ-কে আগ্নেয়াস্ত্র সমেত গ্রেফতার করা হয়েছে শুক্রবার গভীর রাতে। রীতিমতো অভিযান চালিয়ে, ১৮ নং ওয়ার্ডের গেটবাজার এলাকা থেকে বছর ৩৫’র ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল ও গুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জানা যায়, পেশায় রেলকর্মী ভি. শ্রীনু রাও খড়্গপুরের শহরের একসময়ের ত্রাস ‘রেলমাফিয়া’ শ্রীনু নাইডু’র বোন ভি. রামা বাঈয়ের স্বামী। ১৮ নং ওয়ার্ডের নয়াখোলির রেল কোয়ার্টারেই থাকতেন তাঁরা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ভি. শ্রীনু রাও-কে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর অপরাধেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে পুলিশের তরফে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ‘রেলমাফিয়া’ শ্রীনু নাইডু নিজের কার্যালয়ে বসেই খুন হন! পরবর্তী সময়ে তাঁর স্ত্রী পূজা নাইডু তৃণমূলের কাউন্সিলর হন। তিনি প্রদীপ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনায় পূজা জানান, “আমার স্বামী শ্রীনু নাইডু’র ভগিনীপতি ভি. শ্রীনু রাও কোনোদিন দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ওঁর কাছে পিস্তল কিভাবে এল বুঝতে পারছিনা! তবে, আইন আইনের পথে চলবে।” ভি. শ্রীনু রাওয়ের স্ত্রী ভি. রামাবাঈ বলেন, “ও রেলকর্মী। আমরা শুক্রবারই বালাজি দর্শন করে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ফিরেছি। আর, রাতেই গ্রেফতার করা হল! ও কোনোদিন কোনো অশান্তি বা দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলোনা।” অন্যদিকে, শুক্রবার মধ্যরাতে খড়্গপুরের আয়মা এলাকায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে ৪ দুষ্কৃতী জড়ো হয়েছিল। পুলিশের কাছে এই খবর পৌঁছনোর পরই ওই এলাকায় হানা দিয়ে ৪ জনকেই গ্রেফতার করে টাউন থানার পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ডাকাতির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ধৃতদের প্রত্যেকেই খড়্গপুর শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং প্রত্যেকেরই বয়স ২০-২৫’র মধ্যে বলে জানা গেছে। শনিবার তাদের খড়্গপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।