দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ মার্চ: ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির ধারক-বাহক হিসেবে মেদিনীপুরের ইতিহাসে এক অনন্য নাম মহঃ ইয়াসিন পাঠান। আজ থেকে প্রায় অর্ধ-শতাব্দী আগেই মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে পাথরায় অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন ৩৪টি মন্দির প্রাণ দিয়ে রক্ষা করেছিলেন তিনি। ইসলাম ধর্মাবলম্বী (মুসলমান) হয়েও ইয়াসিন পাঠান হয়ে উঠেছিলেন ‘মন্দিরময় পাথরা’র প্রাণপুরুষ। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে এজন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক ‘কবীর’ পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে, টেরাকোটায় অলংকৃত পাথরা’র নবরত্ন মন্দির, কাছারি মহল, রাসমঞ্চ, কালাচাঁদের দালান, দুর্গেশ্বর মন্দির, পঞ্চ শিব মন্দির সহ ৩৪টি মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন ২৫ ডেসিমেল জায়গা এএসআই (ASI/ Archeological Survey of India) বা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ কর্তৃক ‘হেরিটেজ’ স্বীকৃতি লাভ করে এবং বিভাগের তরফে মন্দির সহ ওই স্থান অধিগ্রহণ করা হয়। শুধু মন্দির সংরক্ষণ বা মন্দির বুক দিয়ে আগলে রাখাই নয়, এই সংক্রান্ত গবেষণা ও সাহিত্য চর্চাতেও নিবেদিত প্রাণ সেই ইয়াসিন পাঠানকে রবিবার (১২ মার্চ) “চারণ কবি রজনীকান্ত সেন সাহিত্য পদক” এ সম্মানিত করা হল ‘বাংলাদেশ কবিতা সংসদ’ এর তরফে।
রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পাবনা থেকে এই সুখবর দিয়েছেন স্বয়ং ইয়াসিন পাঠান-ই। বাংলাদেশের পাবনায় অবস্থিত সুপ্রাচীন এই সংস্থা (‘বাংলাদেশ কবিতা সংসদ’)’র ৩০তম প্রতিষ্ঠা বর্ষ এবং আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলন উপলক্ষে রবিবার, ১২ মার্চ (২০২৩) পশ্চিম মেদিনীপুরের ঐতিহাসিক মন্দিরময় পাথরা’র স্থাপত্য রক্ষক মহঃ ইয়াসিন পাঠান-কে “চারণ কবি রজনীকান্ত সেন সাহিত্য পদক- ২০২৩” এ বিভূষিত করা হয় বলে ফোনে জানিয়েছেন সংস্থার নেতৃত্বরা। ইয়াসিন পাঠানের হাতে সম্মান স্মারক ও শংসাপত্র তুলে দেন পাবনা শহরের বিশিষ্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান; মরমী কবি ও আইনজীবী আজিজুল হক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ। উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ কবিতা সংসদ’ এর সভাপতি মানিক মজুমদার সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। পাবনা জেলার রানা ইকো পার্কের সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম মঞ্চে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে।