দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ১৩ ফেব্রুয়ারি: আজকেই (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু’র নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন নবম-দশমের ৮০৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের ওএমআর (OMR) বিকৃত করে চাকরি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সিবিআই এর সেই দাবি বা তথ্য মেনে নিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। এরপরই, সাদা খাতা জমা দিয়ে বা ২-১ টি উত্তর দিয়ে চাকরি পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আইনজীবীরা চাকরি বাতিলের বিরুদ্ধে জোর সওয়াল করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশে কোন স্থগিতাদেশ না দিয়ে রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই সোমবার সন্ধ্যায় ৮০৩ জনের মধ্যে ৬১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি বাতিলের নোটিশ দিয়ে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (www.westbengalssc.com) ধাপে ধাপে বাকিদেরও চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে (বা, নোটিশে) জানানো হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন নিজেদের এই বিজ্ঞপ্তিতে স্বীকার করে নিয়েছে, এই সমস্ত প্রার্থীদের ভুলক্রমে (‘Erroneously Issued’) চাকরির সুপারিশ করেছিলেন তাঁরা। তাই, স্কুল সার্ভিস কমিশনের ১৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে এই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ড. সিদ্ধার্থ মজুমদারের নেতৃত্বাধীন স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, সিবিআই এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী স্কুল সার্ভিস কমিশন আগেই হলফনামা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছিল, ৯৫২ জনের ওএমআর (OMR) বিকৃত করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৮০৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে তাঁরা চাকরির সুপারিশ পত্র দিয়েছিলেন। এর মধ্যেই ৬১৮ জনের চাকরির সুপারিশ বাতিল করা হল। কমিশন পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, এটা ভুল করে করা নিয়োগ। অর্থাৎ ওএমআর জালিয়াতির ফলে যে শিক্ষকরা চাকরি করছিলেন, এসএসসির ২০১৬ নিয়োগ সংক্রান্ত আইনের ১৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে তা বাতিল করা হল। মঙ্গলবার থেকেই নিয়োগপত্র বাতিলের বিষয়টিও শুরু হয়ে যাবে। এই শিক্ষকরা যাতে আর স্কুলে যেতে না পারেন, তার সবরকম ব্যবস্থা করছে এসএসসি। শুভময় ভুঁইয়া নামে এক চাকরি প্রার্থী মামলাটি করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, নবম-দশমের ৮০৩ জন ওএমআর শিটে কারচুপির ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছেন। এসএসসি কোর্টে হলফনামা দিয়ে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, এই ওএমআর শিটগুলিতে কারচুপির তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। তাই, এই সিদ্ধান্ত। চাকরির প্রার্থীদের তাই ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েও লাভ হলো না! সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রথম দফায় যে ৬১৮ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগ জনই সাদা খাতা জমা দিয়ে বা ১-২টি উত্তর করে চাকরি পেয়েছিলেন। পরবর্তী ধাপে বাকিদেরও নিয়োগ বাতিল করা হবে বলে ওই সূত্র জানাচ্ছে।