দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ ডিসেম্বর: সবেমাত্র পিকনিক সেরে পার্ক থেকে বেরিয়েছেন বেশিরভাগ পর্যটকরা। কেউ কেউ বেরোনোর আগে পিকনিকের সরঞ্জাম গোটানোর কাজ করছিলেন। বনকর্মীরাও পার্কের গেট বন্ধ করার কাজ শুরু করেছিলেন। হঠাৎই দুড়দাড় শব্দ! কিছুক্ষণের মধ্যেই ভাঙলো ১ নং গেট। আগেই অবশ্য ‘বিপদ’ বুঝে সরে গিয়েছিলেন বনকর্মীরা। সতর্ক করে দিয়েছিলেন পার্কের মধ্যে থাকা বাকি লোকজনদেরও। এরপরই, প্রবেশ করলেন ‘গছরাজ!’ সোমবার সন্ধ্যায় ‘রোমাঞ্চকর’ এই ঘটনাটি ঘটে জেলা শহর মেদিনীপুরের উপকন্ঠে গোপগড় ইকোপার্কে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। লোহার তৈরি সুবিশাল ১ নং গেট ভেঙে ঢুকে পড়ে দলছুট একটি হাতি। এরপরই, বনদপ্তরের বিশাল বাহিনী ও হুলা পার্টির সদস্যদের নিয়ে পৌঁছে যান বনদপ্তরের আধিকারিকরা। রাত অবধি বনদপ্তরের পক্ষ থেকে হাতিটিকে পার্ক থেকে বের করে জঙ্গলে পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভর সন্ধ্যায় এভাবেই একটি দলছুট দাঁতাল একেবারে মেদিনীপুর শহরের মধ্যে প্রবেশ করে যায়। হুলুস্থুল কাণ্ড বাধে হাতিটিকে কেন্দ্র করে। শেষ পর্যন্ত রাত্রি ১২ টা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়া ওই হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি ওষুধ দিয়ে কাবু করা হয়। বিশাল ক্রেনে করে তুলে, ‘ঐরাবত’ গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যান বনদপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকরা। সেই স্মৃতি মনে করেই, সোমবার রাতভর গোপগড় ইকোপার্কে ঢুকে পড়া হাতিটিকে নজরে রাখার চেষ্টা করে বনদপ্তর। যাতে কোনোভাবেই সেটি না ২-৩ কিলোমিটার দূরে শহরে পৌঁছে যায়! শেষ পর্যন্ত হাতিটি বনকর্মীদের নজর এড়িয়ে কোনো ঝোপে বা জঙ্গলে প্রবেশ করে গেলেও, সেটিকে র্যাডারের মধ্যেই রেখেছেন বনদপ্তরের কর্মীরা। এমনটাই জানিয়েছেন মেদিনীপুর বনবিভাগের এডিএফও বিজয় চক্রবর্তী। একইসঙ্গে, পর্যটকদের সুরক্ষিত রাখতে মঙ্গলবার থেকে এই এলাকায় বনদপ্তরের নজরদারি আরো বাড়ানো হবে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। তবে, এদিন সন্ধ্যার ঘটনা ঘিরে যে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে তা বলাই বাহুল্য।
(আপডেট: মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভোররাতে হাতটি পার্ক থেকে বেরিয়ে সেন্ট জোসেফ হাসপাতাল হয়ে শ্যাওড়া পেরিয়ে গোদামৌলি এলাকায় পৌঁছেছে। এই মুহূর্তে ভাদুতলা রেঞ্জের ওই এলাকাতেই হাতিটি অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।)