দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ ডিসেম্বর: সমালোচকেরা যতোই ব্যঙ্গের হাসি হাসুননা কেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, কর্মই ধর্ম (Work is Worship)। তাঁর মতে, কোনো কাজ-ই ছোটো নয়। চপ বিক্রি করেও সংসার চালানো যায়। বাড়ি, গাড়ি করা যায়! সেই থেকেই অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকে ‘চপ শিল্পের কারিগর’ হিসেবে কটাক্ষ শুনতে হয় বিরোধীদের কাছে। এবার, বিরোধীদের মুখে ঝামা ঘষে, সেই ‘চপ শিল্প’কেই সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের দলবতীপুরে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ (CADC)- এর পক্ষ থেকে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে ডেবরা’র সামগ্রিক উন্নয়ন পর্ষদ কার্যালয় চত্বরেই গড়ে তোলা হয়েছে সরকারি চপের দোকান। সরকারি দপ্তরে, সরকারি চপের দোকান থেকে বিক্রি হচ্ছে গরম গরম চপ, পেঁয়াজি, বেগুনি, পাকুড়ি প্রভৃতি।
সুস্বাদু ও মুচমুচে সেই চপ, বেগুনি বাইরের দোকানের তুলনায় অনেক কম দামে পেয়ে বেজায় খুশি তেলেভাজা প্রেমীরা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে, বেশ স্বাস্থ্যসম্মতভাবেই তেলেভাজা প্রস্তুত করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৪০ জন মহিলা। প্রতিদিন ৪ জন করে কাজ করেন। সরকারিভাবে তাঁদেরকে দেওয়া হয় চপ তৈরির মালমশলা। তাঁরা শুধু প্রস্তুত করেন ও বিক্রি করেন। বিকেলে মাত্র ৩-৪ ঘন্টা সময় দিতে হয়। পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হয় প্রতিদিন ১০০ টাকা। প্রতি দিন বিকেল ৩-টে থেকে সন্ধ্যা ৭-টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই দোকান। শনি ও বৃহস্পতিবার ছাড়া বাকি দিনগুলিতে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার তেলেভাজা বিক্রি হয়। স্বাভাবিকভাবেই, সৎ পথে, স্বল্প সময় ব্যয় করে সংসারের জন্য অতিরিক্ত ১০০ টাকা উপার্জন করতে পেরে খুশি বুল্টি, কাকলি, অনিমা-রা। মাত্র ৫ টাকায় চপ-বেগুনি পেয়ে খুশি ডেবরাবাসীও। সিএডিসির আধিকারিক অভিজিৎ নন্দী বলেন, “চলতি মাসে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে তেলেভাজার স্টল। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীরা যাতে কাজ পান এবং অতিরিক্ত টাকা উপার্জন করতে পারেন সে জন্য তাদের উৎসাহ দিতে এই স্টল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম শহরেও একটি করে এই স্টল তৈরি করা হবে। এই বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গেও কথা হয়েছে। স্থানীয় স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর কর্মীরা যাতে কাজ পান সে জন্যই এই উদ্যোগ। ডেবরার স্টল খুব ভালো চলছে। আগামীদিনে আরও আইটেম বাড়ানো হবে। গ্রসারির স্টল চালুরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।”