দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ নভেম্বর: ‘লাইব্রেরি’, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই শব্দটি ঘুরে বেড়াত প্রত্যেক পড়ুয়ার মুখে মুখে। পাশাপাশি, বইপ্রেমীদের ভিড়ও পরিলক্ষিত হত লাইব্রেরিগুলিতে। যদিও, দিন যত এগোচ্ছে ততই যেন অন্তরালে চলে যাচ্ছে লাইব্রেরি! বর্তমানের টেক দুনিয়ার ধাক্কায় রীতিমতো ‘ব্যাকফুটে’ই থাকছে বইয়ের এই জগৎ। এমতাবস্থায়, নতুন প্রজন্মকে ফের একবার বইমুখী করে তুলতে এবং জীবনে চলার পথে লাইব্রেরির গুরুত্বকে বোঝাতে গত রবিবার (৬ নভেম্বর) স্বাধীনতা সংগ্রামী নবকুমার শেঠের জন্মতিথি উদযাপন এবং সংস্কৃতি উৎসব মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার অন্তর্গত সুধাকৃষ্ণ পাঠাগার প্রাঙ্গণে।
উল্লেখ্য যে, ১৮৮৭ সালের ৬ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী নবকুমার শেঠ। পাশাপাশি, তাঁর স্মৃতিতে একটি মর্মর মূর্তিও স্থাপন করা রয়েছে পাঠাগার প্রাঙ্গণে। এমতাবস্থায়, তাঁর জন্মতিথিতেই গত রবিবার অনুষ্ঠিত হল এই মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান। সকালে ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর মর্মর মূর্তিতে মাল্যদান এবং শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানটি। তারপরে একে একে সম্পন্ন হয় অঙ্কন, আবৃত্তি, সঙ্গীত এবং নৃত্য প্রতিযোগিতা। পাশাপাশি, অনুষ্ঠিত হয় বক্তৃতা প্রতিযোগিতাও। যার বিষয়বস্তু ছিল, “সৃজনশীল চিন্তার বিকাশে এখনও বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম”। সবশেষে অনুষ্ঠিত হয় একটি আলোচনা সভাও। এদিকে, ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষাসদনের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শিশির মাইতি, বর্তমান প্রধান শিক্ষক যুগল প্রধান, সহশিক্ষক সঞ্জয় পন্ডা, সমাজসেবী ও প্রাক্তন শিক্ষক গোবিন্দ প্রসাদ দে, সাহিত্যানুরাগী শেখ আকবর এবং সমাজসেবী খাদিম আলি শাহ সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
এই প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানের সম্পাদক রামপদ সাহু জানিয়েছেন, “বই পড়ার প্রতি এখন যে অনীহা তৈরি হয়েছে তা সর্বত্রই পরিলক্ষিত হচ্ছে। অথচ বই হল সমাজ এবং সভ্যতার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। এমতাবস্থায়, বর্তমান যুবসমাজকে ফের বইমুখী করার লক্ষ্যে আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।” পাশাপাশি, ওই পাঠাগারের এক সক্রিয় সদস্য উৎপল কুন্ডু জানিয়েছেন যে, “এই অনুষ্ঠানে আমাদের এলাকার সর্বস্তরের মানুষ যোগদান করেছেন। সকলের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিই এই অনুষ্ঠানের মাধুর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।”