তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ আগস্ট: ভাঙাচোরা বাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছিলেন পান্তি পিসি। শুধু পান্তি পিসি কেন, উই ঢিবির মতো ওই ঘরে হয়তো পান্তি পিসি’র সঙ্গে বাস করত সাপ-খোপ-পোকামাকড়’ও। রোদ-বৃষ্টি প্রবেশ করতো জানালা দিয়ে নয়, খোলা চাল দিয়ে! ২০২১-এর ভয়াবহ ইয়স (Yaas) ঝড়ের আগে পান্তি পিসি’র সেই বাড়ি নিয়ে শুধু তিনি নিজেই নন, মহা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছিলেন আপামর ঘাটালবাসী! ঝড় আসার আগে, কোনো মতে একটি কালো ত্রিপল জোগাড় করে, পান্তি পিসি তাঁর ভাঙা চালায় বাঁধছিলেন। সেই ছবিই উঠে এসেছিল স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। আর, তা ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব’কে টুইট করেছিলেন ঘাটালের দুর্গাপুর গ্রামের সজল গোস্বামী নামে এক ছাত্র। তারপরই, পান্তি পিসি’র বাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতি উড়ে আসে দৈব-বাণীতে! অবশেষে, ১ বছর ৩ মাসের মাথায় পাকা বাড়ি পেলেন দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের সোনাখালি গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব পান্তি পিসি (এই নামেই এলাকায় পরিচিত) ওরফে শিখা চক্রবর্তী। সোমবার ছিল সেই বাড়ির গৃহপ্রবেশ। পান্তি পিসি’র আক্ষেপ একটাই, সকলেই এলেন, আসতে পারলেন না দেব-দাদা!

thebengalpost.net
নতুন বাড়ির সামনে পান্তি পিসি:

সোমবার পান্তি পিসি’র বাড়ির গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠান ঘিরে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। পান্তি পিসির বাড়ির সামনে সকাল থেকেই ছিল লোকে লোকারণ্য। অনেকেই ভেবেছিলেন তাঁদের প্রিয় ‘অভিনেতা’ সাংসদ দেব পান্তি পিসি’র বাড়ির গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে আসবেন। নতুন বাড়ির চারপাশে লাগানো হয়েছিল দেব ওরফে দীপক অধিকারী’র ছবি। পিসিও বললেন, “দেব দাদা এতো টাকা দিয়ে আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিল। একবার আমার বাড়িতে এলে খুব ভালো লাগতো।” সাংসদ দেবের প্রতিনিধি রামপদ মান্না অবশ্য জানিয়েছেন, দেব দা কোন একদিন পান্তি পিসির বাড়ি ঘুরে যাবেন। জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের সাথে পান্তি পিসি’র বাড়ির বিষয়ে যোগাযোগ করেছিলেন দেব। জেলা প্রশাসনের তরফে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা অনুমোদন করা হয়েছিল। বাকি প্রায় ৫ লক্ষ টাকা স্বয়ং দেব বাড়ি তৈরির জন্য দিয়েছিলেন। সাংসদ তহবিল থেকে নয়, ব্যক্তিগত ভাবেই দেব সেই অর্থ দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এদিন, বাড়ি দ্বার উন্মোচন করেন মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস, সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না প্রমুখ। তবুও পান্তি পিসি’র মন খারাপ! যাঁর জন্যই সব কিছু, সেই দেব-দাদা’ই এলেন না!

thebengalpost.net
সেই ভাঙা বাড়ি: