দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ আগস্ট:রাত পোহালেই ২২ শে শ্রাবণ! প্রকৃতির বৃষ্টি-ধারা আর নয়নের অশ্রু-ধারা মিলেমিশে একাকার হওয়ার দিন। প্রিয় ‘রবি’র ‘ঠাকুর’ হওয়ার দিন! ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে তিনিই লিখে গেছেন, “বন্ধু, রহো রহো সাথে/ আজি এ সঘন শ্রাবণপ্রাতে….।” অন্তহীন সেই বন্ধুত্বের ‘শপথ’ নিয়েই, ২১ শে শ্রাবণ, রবিবার (৭ আগস্ট, ইংরেজি তারিখ হিসেবে রবি ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস), বৃষ্টিস্নাত মেদিনীপুর শহরে আয়োজিত হল- ‘দোস্তানা’। ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে হাতে হাত রেখে ‘মানববন্ধন’ এর অভিনব সাক্ষী হয়ে রইল জেলা শহর। সোমে ২২ শে শ্রাবণ, মঙ্গলে মহরম এবং বিশ্ব আদিবাসী, বৃহস্পতিতে শহীদ ক্ষুদিরামের আত্মবলিদান দিবস আর রাখী বন্ধন- আর এই সব কিছুকে সামনে রেখেই মেদিনীপুরের সমাজকর্মীরা শহরের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আয়োজন করেছিলেন, অভিনব এই অনুষ্ঠান- ‘দোস্তানা’। হাতে রাখী পরিয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানের। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে একটি চারাগাছ লাগিয়ে সবুজ শহরের বার্তা দেন পৌরপিতা সৌমেন খান এবং জেলার বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক সুজয় হাজরা। উপস্থিত ছিলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষক ড. বিবেকানন্দ চক্রবর্তী, লেখিকা রোশনারা খান, জাতীয় শিক্ষক বীরেন পাল, নছিপুর আদিবাসী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাথ ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মানে ভূষিত স্বপন পড়িয়া, কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ পানিগ্রাহী, সাহিত্যিক বিদ্যুৎ পাল সহ বহু গুণীজন।
আয়োজকদের তরফে মৃত্যুঞ্জয় সামন্ত, মণিকাঞ্চন রায়-রা জানান, “ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। এরকম এক ‘বন্ধুত্ব দিবস’ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য, সমাজে মানুষ মানুষের পাশে থাকবে, বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় হবে। আর, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রণী মেদিনীপুর শহর থেকেই সেই বার্তা ছড়িয়ে পড়বে।” এদিনের মানব বন্ধনে অংশ নেয় মেদিনীপুর কুইজকেন্দ্র, মেদিনীপুর ছাত্র সমাজ, জঙ্গলমহল উদ্যোগ, সংকল্প ফাউন্ডেশন সহ একাধিক সামাজিক সংগঠন ও সমাজকর্মীরা।
‘টিম দোস্তানা’র এদিনের সকালের কর্মকান্ডের পর ডেবরার চককুমার এসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল সার্ভিসের আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘বাল্মিকী প্রতিভার বিকাশ’ কর্মসূচী সম্পন্ন হয়। ছাত্রদের নিয়ে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ করা হয়। অনন্য সুন্দর পরিবেশে কচিকাচাদের প্রতিভা বিকশিত করার কাজটি করে চলেছেন ত্রিদিব দাস বেরা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ‘ছাত্র সমাজ’ এর পক্ষ থেকে কৃষ্ণগোপাল চক্রবর্তী ও কৌশিক কঁচ বলেন, “এই আবাসনে শুধু জেলার নয়, জেলার বাইরে এমনকি দেশের বাইরের ছেলেরাও থাকে। হোম সম্পর্কে মানুষের যে ধারণা রয়েছে, তা ভ্রান্ত প্রমাণ করে এই হোম।” এখানে উপস্থিত থেকে উৎসাহিত করলেন শিক্ষিকা মধুশ্রী দাস, ডাঃ জগদীশ মাইতি, অনির্বাণ মাইতি, পীযূষ ঘোষ, নরসিংহ দাস, সুদীপ কুমার খাঁড়া, বিপ্লব আর্য প্রমুখ।