দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ জুলাই:’এ লজ্জা রাখি কোথায়?’ অ-পা (অর্পিতা-পার্থ) কাণ্ডের পর একটাই কথা এখন মুখে মুখে ঘুরছে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে! কর্মীদের জবাব দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মন্ত্রী-সান্ত্রীদের। তার মধ্যেই আবার, অপছন্দের নেতা-নেত্রীদের পার্থ-অর্পিতা সাজিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ! জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরেও অ-পা কাণ্ডের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। বাজার-হাট, ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিস, জেলা পরিষদ-কালেক্টরেট সর্বত্র এক আলোচনা! ‘এত টাকা এলো কোথা থেকে?’ ‘পার্থ চ্যাটার্জি’র এতো বান্ধবী?’ এমনকি, গত এক সপ্তাহ ধরে মহিলারাও সিরিয়াল দেখা ছেড়ে চোখ রেখেছেন নিউজ চ্যানেল আর সোশ্যাল মিডিয়ায়! প্রতি মুহূর্তে একের পর এক বোম-ব্লাস্টিং আপডেট, ‘মজার মজার মিম’ আছড়ে পড়ছে সেখানে। শুক্রবার রাতে ঠিক এমনভাবেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর কিছু অনুরাগী (বা, অনুগামী) মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে আটকে গেলেন কয়েক মুহূর্তের জন্য! একি? আমাদের প্রিয় দাদা’র ছবি যে! চক্ষু চড়কগাছ অনুরাগীদের। যে বা যারা পোস্ট করেছে, তারাও যে বেশ চেনাশোনা! সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনশট নিয়ে, কয়েক মিনিটের মধ্যেই দাদা-কে ফোন। এর কয়েক মুহূর্ত পরেই অবশ্য সেই পোস্ট উধাও! এমনকি মন্ত্রী দেখার আগেই। তাতে কি, এভাবে একজন ‘মন্ত্রী’র ‘সম্মান’ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কে দিয়েছে? পুলিশকে জানানো হল।

thebengalpost.net
মুখ পুড়ছে এই অপা জুটির জন্য-ই !

তখন গভীর রাত। কিন্তু, অভিযোগ পেয়ে রাত্রি ১২ টা-তেই বছর ৩৫-এর এক যুবককে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নিয়ে নেওয়া হয় সেই মোবাইল। এর মধ্যেই, গোটা গ্রাম উঠে আসে থানার সামনে। রাত্রি একটা’তেই থানার সামনে তুলকালাম কাণ্ড! এতো রাতে কেন তুলে নিয়ে এসেছেন? কোন‌ অর্ডারের ভিত্তিতে তুলে নিয়ে এসেছেন? কি অপরাধ করেছে? এক্ষুনি আমাদের জানান- ইত্যাদি ইত্যাদি। ততক্ষণে তো ওই যুবক-ও পোস্ট করা সেই মিম সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তুলে নিয়েছেন। অগ্যতা পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় রাত্রি একটা-দেড়টা নাগাদ (তারিখ অনুযায়ী ৩০ জুলাই, শনিবার)। তবে, মোবাইল খানা আটকে রাখে বলে দাবি ওই যুবক ও গ্রামবাসীদের। অভিযোগ সত্যি কিনা যাচাই করে দেখার জন্য-ই মোবাইল আটকে রাখা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। যদিও শনিবার সন্ধ্যা অবধি এই ঘটনা আর বেশিদূর এগোয়নি বলেই জানা গেছে। আর, পুলিশ-ও জানিয়েছেন, “একে আটক বলবেন না! একটা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সঙ্গে সঙ্গেই। তার মধ্যেই লোকজন জুটে যায়।” আর মোবাইল? “ওটা একটু দেখা হচ্ছে।”

thebengalpost.net
গভীর রাতে থানায় তুমুল বিক্ষোভ:

এদিকে, ওই যুবক শনিবার বিকেলে আমাদের জানান, “হ্যাঁ, এটা ঠিক আমি একটা ছবি পেয়েছিলাম পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। সেই ছবির মুখটা মন্ত্রীর ছবিতে বসিয়ে দেখছিলাম এডিট করে! তবে, সঙ্গে সঙ্গেই তা ডিলিট করে দিয়েছি। তারপরও বিনা নোটিশে রাত ১২ টায় আমাকে তুলে নিয়ে আসা হল! মোবাইল-টাও আটকে রাখা হয়েছে।” জানা যায়, সক্রিয় কর্মী না হলেও, ওই যুবক-ও তৃণমূল সমর্থক! তবে কি নিছক মজা করতেই এই কাণ্ড? সেই জবাব অবশ্য যুবক এড়িয়ে গিয়েছেন। এদিকে, ওই মন্ত্রী ফোনে জানান, “হ্যাঁ, আমাকে ফোন করে কয়েকজন জানায় ঘটনার কথা। কি বলব, খুবই নিন্দাজনক ঘটনা। এইভাবে কারুর সম্মান নিয়ে খেলা করা একধরনের অপরাধ। যদিও পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছে বলে শুনেছি, তবুও বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।”

thebengalpost.net
সেই মিম (সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মানের স্বার্থে ব্লার করা হয়েছে) :