তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ জুন:নাম দেবতার, কাজ অসুরের! এমনটাই ঘটলো পশ্চিম মেদিনীপুরে। আর, মাঝবয়েসে এসে তার ফল-ও ভুগতে হল ঘাটালের বাসিন্দা হরিহর সামন্ত-কে। তথ্য লুকিয়ে দ্বিতীয় বার বিয়ে করা এবং ধরা পড়ে যাওয়ার পর সেই দ্বিতীয় স্ত্রী-কে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগে বছর ৫০-এর হরিহর-কে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল ঘাটাল মহকুমা আদালত। বৃহস্পতিবার ঘাটাল মহকুমা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সঞ্জয় কুমার শর্মা এই নির্দেশ দেন।
জানা যায়, ঘাটাল শহরের কুশপাতা’র বাসিন্দা, পেশায় মুরগি ব্যবসায়ী হরিহর সামন্ত বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তথ্য গোপন করে পূর্ণিমা সামন্ত নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পরেই পূর্ণিমা জানতে পারেন, হরিহরের আরো এক স্ত্রী ছাড়াও প্রথম পক্ষের ছেলে, মেয়ে এবং জামাই রয়েছেন। এরপরই, পূর্ণিমার সঙ্গে হরিহরের গোলমাল শুরু হয়। তা আদালত অবধি গড়ায়। আদালত পূর্ণিমার দাবি মেনে বিচ্ছেদ এবং খোরপোষে সায় দেয়। ২০১৩ সালের ১ জুলাই পূর্ণিমা হরিহরের দোকানে যায় খোরপোষর টাকা আনতে। সেখানেই হরিহর, তার আগের পক্ষের জামাইকে সঙ্গে নিয়ে পূর্নিমার উপর হামলা করে বলে অভিযোগ। ধারালো অস্ত্র দিয়ে পূর্ণিমা-কে এলোপাতাড়ি কোপানো হয় বলেও জানা যায়। কোনোক্রমে পালিয়ে নিজের প্রাণ রক্ষা করেন পূর্ণিমা এবং ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হন। ঘটনায় ঘাটাল থানার অভিযোগ দায়ের করেন পূর্ণিমা। সেই মামলাতেই বিচার পর্ব শেষে বৃহস্পতিবার রায়দান হল ঘাটাল মহকুমা আদালতে। আদালতের রায়ে খুশি পূর্ণিমার দাবি, “প্রতিনিয়ত আমার উপর অত্যাচার করত। এমনকি সেদিন তো আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। সেই মেরে ফেলার দাগ আমার গোটা শরীর এখনও বহন করে বেড়াচ্ছে।” এ বিষয়ে ঘাটাল আদালতের সরকারি আইনজীবী তপন কুমার ভট্টাচার্য বলেন, “ওনার বিরুদ্ধে থাকা ৪৪৯, ৩২৬, ৩০৭ ধারাগুলি প্রমাণিত হয়েছে এবং উনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।” যদিও, আসামী পক্ষের আইনজীবী তপন কুমার রায় বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।