দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ জুন: দাদা দিলীপ ঘোষ এলাকার প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান তথা শাসকদলের দোর্দণ্ড প্রতাপ নেতা। ভাই অরূপ ঘোষের প্রভাব (বা, প্রতাপ) নাকি তার থেকেও বেশি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রামে নাকি এমন কেউ নেই, যে এই অরূপের মার বা রোষের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে! তাই, গোটা গ্রাম এক প্রকার ক্ষোভে ফুঁসছিল এই অরূপের বিরুদ্ধে। তবে, এলাকার মন্ত্রী বা বিধায়কের ঘনিষ্ঠ এই প্রভাব খাটিয়ে চলা অরূপের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে ভয় পাচ্ছিলেন এলাকাবাসী। সেই অরূপ-কেই এলাকার যুবক হরিপদ হাজারী (বয়স আনুমানিক ৩৬-৩৭) খুনে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ যখন গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে, এলাকাবাসী তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন! সব জেনেশুনেই হয়তো পুলিশও ঝুঁকি নিতে চায়নি। জনরোষের ভয়েই হয়তো অভিযুক্তকে রীতিমতো হেলমেট পরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গেল! ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর গড়বেতা- ৩ নং ব্লকের সাইনাড়া গ্রামের। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের হরিনাম সংকীর্তন উপলক্ষে, যে জুয়া খেলার আসর বসে, সেখানেই বচসার জেরে অশান্তি এবং তারপর-ই যুবক হরিপদ হাজারী-কে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মূল অভিযুক্ত বছর ৪০ এর অরূপ ঘোষ, তার আত্মীয় সুকুমার সেন এবং প্রশান্ত মহাদন্ড-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার দুপুরে জানিয়েছেন, সাইনাড়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ওই গ্রামে কীর্তন বসেছিল। অভিযোগ, কীর্তন চলাকালীন-ই জুয়া বসেছিল গ্রামে। জুয়ার গুটি চালাচালিকে কেন্দ্র করে জুয়া পার্টির সঙ্গে মৃত যুবক হরিপদ হাজারীর বচসা শুরু হয়। তারপর, মাঝরাতে (রাত্রি ১১টা-সাড়ে ১১ টা নাগাদ), যুবককে মৃত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে। গ্রামবাসী এবং পরিবারের অভিযোগ, অরূপ-রাই যুবককে প্রথমে মারধর করে। পরে, রাতের দিকে মেরে ঝুলিয়ে দেয়। শুক্রবার সকালে এলাকার লোকজন এক অভিযুক্ত-কে বেঁধে মারধর করে বলেও জানা যায়। অন্যদিকে, জেলা পুলিশের আধিকারিক পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত অরূপ ঘোষ-কে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। শেষমেশ, শুক্রবার দুপুর নাগাদ অরূপ ঘোষ সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ।