দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, তনুপ ঘোষ, ১৪ মে: কবি (সমর সেন) গেয়েছিলেন, “আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়ার ফুল/ নামুক মহুয়ার গন্ধ।” আর, তীব্র গরমে পশ্চিম মেদিনীপুর বাসী গাইছেন, “এই গরমে মুক্তি খুঁজছি সুশীতল তালের রসে/ প্রাণ জুড়োতে ডুব দিচ্ছি প্রিয় সেই গন্ধে !” হ্যাঁ, ‘অশনি’র আশ্বাস আর নেই! ফের ছুটছে রোদের হল্কা। সঙ্গে বাতাসের অস্বস্তিকর আর্দ্রতা। সবমিলিয়ে প্যাচপ্যাচে গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার বাঙালি। তবে, গরম থেকে বাঁচতে শহরবাসীর আছে এসি (AC) কিংবা কুলার। কেউবা আবার, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বার কিংবা রেস্টুরেন্টে আশ্রয় নিচ্ছেন! গ্রামবাসীদের অবশ্য সেই সুযোগ নেই! তাই, শরীর আর মন-কে ‘ঠাণ্ডা’ করতে, তাঁরা পৌঁছে যাচ্ছেন গ্রামের তাল তলাগুলিতে। হ্যাঁ, গরম পড়তেই তালের রস খাওয়ার জন্য উপচে পড়া ভিড় এখন তাল তলায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার বিভিন্ন এলাকায় কিংবা অলিগলিতে কান পাতলেই এখন শোনা যাচ্ছে, “প্রচন্ড রোদ আর গরমে শরীর জ্বলে যাচ্ছে! একটু তালের রস খেয়ে আসি চল।” তালের রস খেতে তাই মাঠ কিংবা জঙ্গল লাগোয়া তাল তলাগুলিতে পৌঁছে যাচ্ছেন এলাকার যুবকেরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বছরের এই একটা সময়ে পাওয়া যায় তালের রস। শীতের খেজুর রসের মতোই গরমের তীব্র দাবদাহে তালের রসের চাহিদা তীব্র! দাবদাহে একটু স্বস্তি পেতে এখন তালতলায় ভিড় জমিয়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা যুবক থেকে বয়স্করাও। অনেকের কাছেই এই তালের রস কিছুটা ‘নেশা’র দ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ঠিকই, তবে, গাছ থেকে সরাসরি সংগৃহীত এই তালের রস শরীরের জন্য উপকারী বলেও মানছেন অনেকে। বছরের এই সময়ে তালের রস সংগ্রহ করতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আশেপাশের জেলা থেকেও আসছেন অনেক যুবক। তাঁরা মাঠের মধ্যে তাঁবু খাটিয়ে তালের রস সংগ্রহ করছেন এবং তা বিক্রি করে উপার্জনও করছেন।