দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ মে: সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বচসা, উত্তেজনা; আর তা থেকেই চলল গুলি! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর শহরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাউথ ডেভেলপমেন্ট এলাকার ঘটনায় আতঙ্কে গোটা রেলশহর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুলিবিদ্ধ যুবক সুনীল গুপ্তা-কে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে খড়্গপুর টাউন থানা। জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। পারিবারিক বিবাদ বা প্রতিবেশী-শত্রুতার জেরেই এই ঘটনা বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। তবে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ। এলাকার দখল নিয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
জানা গেছে, ওই এলাকার গুপ্তা ও সিং পরিবারের পারিবারিক বিবাদ বা শত্রুতা দীর্ঘদিনের। বুধবার বিকেলে গুপ্তা পরিবারের আদিত্য গুপ্তা নামে বছর ১৮’র যুবক বাড়ির বাইরে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল। ওই সময় ওই রাস্তা দিয়ে সিং পরিবারের এক যুবতী যাওয়ার সময় আদিত্য তাকে কটুক্তি করে বলে সিং পরিবারের অভিযোগ। তার থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। সেই ঘটনার জেরে ছোটু সিং ও তার পরিবারের সদস্যরা বাইরে থেকে আরো লোকজন নিয়ে এসে আদিত্য গুপ্তা ও তার বাবা বছর ৪০-৪২’এর সুনীল গুপ্তা-কে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় তাঁরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করে আসেন। এরপর গভীর রাতে রীতিমতো জানালা ভেঙে প্রায় ৩০-৪০ জন ঢুকে গুলি চালায়। ৪-৫ রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হয় সুনীল গুপ্তা। তার শরীর লক্ষ্য করে ৪ রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ গুপ্তা পরিবারের। নিজের জামাই বাবু-কে উদ্ধার করতে গিয়ে প্রহৃত হন পাশের বাড়ির বাসিন্দা টিংকু রানা নামে আরও এক যুবক। রাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সকলকে ভর্তি করা হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় তাদের। টিংকু রানার দাবি, “পুরনো পারিবারিক শত্রুতা ছিল। তারপর গতকাল রাতে আমার ভাগ্না ফোনে কথা বলার সময় ওরা ভাবে পাশ দিয়ে যাওয়া প্রতিবেশী ছোটু সিং এর বোনকে গালাগালি করেছে। তার জেরে এই গন্ডগোল তৈরি হয়। ওরা প্রচুর পরিমাণে বাইরে থেকে লোক এনে মারধর ও গুলি করেছে।”
আদিত্য’র অভিযোগ, “আমরা মাতা পুজোর জন্য ৮ মে এসেছি খড়্গপুরে। হায়দ্রাবাদে আমি ও বাবা (সুনীল গুপ্তা) কাজ করি। ২৪-২৫ মে চলে যাব। ওরা একটা অজুহাত খুঁজছিল মারবে বলে। টার্গেট করে মারা হয়েছে। আগেও মেরেছে আমার বাবাকে। আমাদের বাড়ির সামনে ওরা দুটো গাড়ি রাখে। ওদের (সিং পরিবারের) সবকিছুতেই অসুবিধা।” গভীর রাতেই ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাণা মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সিং পরিবারের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে , মূল অভিযুক্ত ছোটু সিং ফেরার! তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ছোটুর দিদি আর তার বাবা-কে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।