দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ এপ্রিল:এলাকা জুড়ে জঞ্জালের স্তূপ। আবর্জনায় ভরেছে রাস্তাঘাট। নর্দমার জল উঠছে রাস্তায়। দূষণ আর দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকাজুড়ে। প্রতিশ্রুতি থাকলেও, নবনির্বাচিত কাউন্সিলরের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই! অভিযোগ, বারবার আবেদন জানানোর পরেও হেলদোল দেখা যায়নি শাসকদলের কাউন্সিলরের। তাই, সোমবার সকাল থেকে গোটা এলাকা জুড়ে অভিনব পোস্টার সাঁটিয়ে কাউন্সিলর-কে কার্যত ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুঁড়ে দিয়ে, স্থানীয় বিজেপি নেতা লিখলেন, ৭২ ঘন্টার মধ্যে এলাকা পরিষ্কার না করলে, তিনি নিজেই গামছা পরে এলাকা পরিষ্কার করবেন! ঘটনাটি, রেল শহর খড়্গপুরের ৩৪ নং ওয়ার্ডের প্রেমবাজার সোসাইটি এলাকার। এই এলাকার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষ। সোমবার সকালে তাঁকে উদ্দেশ্য করে স্থানীয় বিজেপি নেতা যে পোস্টার সাঁটিয়েছেন, তাতে লেখা, “মাননীয় কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষ। ৭২ ঘন্টার মধ্যে পুরো সোসাইটিকে পরিষ্কার করতে হবে। নাহলে আমি কোমরে গামছা বেঁধে বৃহস্পতিবার দিন সকাল সাতটায় মাঠে নেমে পড়বো আর একা সোসাইটি পরিষ্কার করব।”
শুধু তাই নয়, ওই পোস্টারে এও হুমকি দেওয়া হয়েছে, “ আবর্জনাগুলি প্রেম বাজারে ফেলে দেবো। সাথে লেখা থাকবে, ‘অপূর্ব ঘোষের ব্যর্থতা!’ আপনার সময় শুরু হল এখন।” পোস্টারের নিচে লেখা ‘আমি সৌরভ নাথ’। উল্লেখ্য যে, এলাকায় ডাকাবুকো বিজেপি নেতা হিসেবেই পরিচিত এই যুবক। সোমবার তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “দীর্ঘদিন এলাকার জঞ্জালের স্তূপ, নালা নর্দমা পরিষ্কার হয়নি! জঞ্জাল উঠে এসেছে রাস্তায়। দুর্গন্ধে টেকা দায়। অনেকবার ওনাকে জানিয়েছি। কিন্তু, কোনো গুরুত্বই নেই! আসলে, নির্বাচনে জিতে গেছেন তো। এখন আর ওনার কোন দায় নেই! আবার নির্বাচন এলে, তার আগে উনি মাঠে নামবেন। তাই, বাধ্য হয়েই এলাকাজুড়ে এই পোস্টার দিতে বাধ্য হয়েছি! ৭২ ঘন্টা সময় দিয়েছি ওনাকে। দেখা যাক, এতে কজ হয় কিনা।” এনিয়ে, কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষ-কে ফোন করা হলে, তিনি রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে জানালেন, “ওকে টাকা দিয়ে কেউ এসব কাজ করিয়েছে। আমি সবই জানি। এনিয়ে কিছু বলতে চাইনা!” কিন্তু, এলাকাজুড়ে কেন আবর্জনা? সেই প্রশ্ন করার আর সুযোগ দেননি অপূর্ব বাবু। উল্লেখ্য যে, প্রায় এক মাস আগে, খড়্গপুর পৌরসভার বোর্ড গঠন হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান-রা দায়িত্বও নিয়ে নিয়েছেন। তবে, প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে খড়্গপুর পৌরসভার ৫ জন সিআইসি বা পুর পারিষদের নাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি! কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, সিআইসি পদের অন্যতম দাবিদার এই ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অপূর্ব। হয়তো কয়েকদিনের মধ্যে সিআইসি (চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল) দের নাম ঘোষণাও হয়ে যাবে। আর, তার ঠিক আগেই, এই ধরনের ঘটনায় অভিজ্ঞ কাউন্সিলর অপূর্ব যে রীতিমতো বিবম্বনায় পড়লেন, তা বলাই বাহুল্য!