মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ মার্চ: ফের শিরোনামে জঙ্গলমহলের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (Vidyasagar University)। এর আগে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্য তথা দেশে নিজেদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। এবার, বজ্রপাত‌ এবং মেঘের অবস্থা সম্পর্কিত পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য অত্যাধুনিক এক যন্ত্র বসানো হলো এই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই ব্যবস্থার পোশাকি নাম- লাইটনিং ডিটেকসন সিস্টেম (Lightning Detection System)। ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই লাইটনিং ডিটেকসন সিস্টেম-এর শুভ উদ্বোধন করেন বিদ‍্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজীপ্রতিম বসু। বর্তমান সময়ের নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই যন্ত্রটি, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গবেষণা এবং স্থানীয় মানুষের উপকারের জন্য উৎসর্গ করেন উপাচার্য।

thebengalpost.net
লাইটনিং ডিটেকসন সিস্টেম (Lightning Detection System)-এর উদ্বোধন :

উল্লেখ্য যে, বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বেড়ে চলেছে বজ্রপাতের পরিমাণ। কখনও বা ‘বিনা মেঘে বজ্রপাত’, কখনও বা ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে ভয়াবহ বজ্রপাতের ঢেউ আছড়ে পড়ছে গ্রাম বাংলার জমিজমা থেকে রাস্তাঘাট সর্বত্র! অসহায়ের মতোই মানুষকে মেনে নিতে হচ্ছে প্রকৃতির মৃত্যু অভিশাপ! হয়তো একে আটকানো সম্ভব নয়, কিন্তু আগাম পূর্বাভাস থাকলে, ‘মৃত্যু’র হার হয়তো কমানো সম্ভব। বেঁচে যাবেন গ্রাম বাংলার বহু কৃষক থেকে সাধারণ মানুষ- অনেকেই! অনুষ্ঠানে উপস্থিত সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের ডাইরেক্টর ড. জ্যোতি শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এই যন্ত্রের কার্যকারিতা ও উদ্দেশ্য ব‍্যাখ‍্যা করে বলেন, “এই যন্ত্রের মাধ্যমে বজ্রপাতের ঘটনা সনাক্ত করা এবং মেঘ থেকে বজ্রপাতের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিতকরণ সম্ভব। ভারতের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও তার ভৌগোলিক অবস্থান এবং বজ্রপাতের সংখ্যার তথ্যভান্ডারও তৈরি করা সম্ভব হবে। ভবিষ্যতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা এবং আগাম সনাক্তকরনও সম্ভব হবে।” উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু বলেন, “এই যন্ত্র নিঃসন্দেহে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুকুটে আরও একটি পালক যোগ করল। বর্তমান সময়ে এই যন্ত্রের উপযোগিতা অপরিসীম!” এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক সত্যজিৎ সাহা, আইকিউএসি’র ডাইরেক্টর অধ্যাপক মধুমঙ্গল পাল প্রমুখ। প্রসঙ্গত এও উল্লেখ্য যে, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া দপ্তর (Vidyasagar University Metrological Park) টিও জেলা তথা শহরের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বসানো হয়েছে বিশেষ এক স্বয়ংক্রিয় ডিসপ্লে বোর্ড। যেখানে প্রতিদিনের দূষণ, তাপমাত্রা, জলীয় বাষ্প- সম্বন্ধীয় তথ্য ফুটে ওঠে। এবার, সেই মুকুটেই যুক্ত হল আরও একটি পালক। ‌