দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ ফেব্রুয়ারি:সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী (বিকেল ৫ টা), পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মধ্যে একমাত্র ‘মিনি ইন্ডিয়া’ খড়্গপুরেই বোমা-বন্দুকের সামান্য ‘খেলা’ হয়েছে! তবে, পুলিশি তৎপরতায় সেই খেলা অনেকখানি বানচাল করা গেছে। খড়্গপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট লুট করতে এসে চলল বোমা-বন্দুক। ভেঙে দেওয়া হয় ইভিএম মেশিন। ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতী মুখে গামছা, মাস্ক পরে ঢুকে পড়ে বুথের মধ্যে। প্রিসাইডিং অফিসারের মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে চলল চড়-থাপ্পড়। খড়গপুরের ভারতী বিদ্যাপীঠ স্কুলে ছিল ৫ টি বুথ। এই প্রত্যেকটি বুথের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। প্রত্যেকটি বুথে ঢুকে বন্দুক উঁচিয়ে দেখানো হল চোখ রাঙ্গানি। আতঙ্কে চোখে জল এসে গেল স্থানীয় কয়েকজনের! অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ভোট লুট করতে এসে এই কাণ্ড ঘটিয়েছ। যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রবীর ঘোষ। সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রথমে ছাপ্পা ভোট এবং পরে ভেঙ্গে দেওয়া হল ইভিএম মেশিন। অভিযোগ সিপিআই প্রার্থী নিলু সিং এর। শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগকে কেন্দ্র করে রবিবার দুপুরে রণক্ষেত্র চেহারা নিল খড়গপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড। দফায় দফায় সিপিআই এবং তৃণমূল দুই দলের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি, কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। বিশাল পুলিশবাহিনী আসে। কিন্তু, পুলিশের সামনেই চলে ধাক্কাধাক্কি। ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ। উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে লাঠিচার্জ করল পুলিশ। রবিবার খড়্গপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ট্রাফিক হাইস্কুলের বুথে ঘটনাটি ঘটেছে। এদিন, সকাল থেকেই ওই ওয়ার্ডের এই বুথে দু’পক্ষের জমায়েত ঘিরে উত্তেজনা ছিল। বেলা বাড়তেই দু’পক্ষের ভিড় বাড়তে থাকে। এর পরে বচসা থেকে দু’পক্ষের হাতাহাতি হয়। কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূল এসে তাঁদের উপর হামলা করে। এমনকি কংগ্রেস প্রার্থী বিষ্ণু বাহাদুর কামিকেও মারধর করা হয় বলে তৃণমূল প্রার্থী (মান্টা) হায়দার আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ। যদিও পাল্টা একই অভিযোগ তোলেন তৃণমূল প্রার্থী। এর পরে র্যাফ, ইএফআর-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে লাঠিচার্জ করে। ছত্রভঙ্গ করে দেয় দু’পক্ষের জমায়েতকে। এদিকে, খড়্গপুর তালবাগিচাতে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তুললেন বিজেপি প্রার্থী হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, বেশকিছু তৃণমূল সমর্থক গায়ে ‘কাকা’ লেখা গেঞ্জি পরে ভোট কেন্দ্রের সামনে জটলা করে ভোটারদের প্রভাবিত করছে বলে অভিযোগ আনেন তিনি। অভিযোগ পাওয়ার পর বিশাল পুলিশবাহিনী এসে তালবাগিচা হাই স্কুলের সামনে সবাইকে হটিয়ে দেয়। খড়্গপুর শহরের ওই এলাকা জানে, এই কাকা হলেন, ৩৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী জহর পাল। নতুন এই স্টাইলে তাঁর বাহিনী কতখানি খেলতে পারলো, তা অবশ্য বোঝা যাবে ফলাফলের পরই!
এদিকে, সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৭টি পুরসভায় গড়ে ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশ। চূড়ান্ত না হলেও, শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ভোট পড়েছে ৭৫.৫৫ শতাংশ। এর মধ্যে- মেদিনীপুর ৭৬.৫১; খড়গপুর- ৭০.০৪; ঘাটাল- ৮১; খড়ার- ৮২; রামজীবনপুর- ৮৮.৪৩; চন্দ্রকোনা- ৮৯.১১ এবং ক্ষীরপাই ৮৭.৮৫। বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি ছাড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ভোটদান হয়েছে বলেই পুলিশ প্রশাসন সূত্রে খবর।