দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ ফেব্রুয়ারি:”বুধবার ভোর চারটা থেকে শুরু হয়েছে বোমা বর্ষণ। কিয়েভে (বা কিভে/Kyiv) কারফিউ জারি করা হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমাদের বলা হল, বাঙ্কারে প্রবেশ করতে। সেখানেই ছিলাম। এরপর, বোমা বর্ষণ বন্ধ হলে, আমাদের বলা হল, যে যার রুমে চলে যেতে। রুমে যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে ফের বোমা বর্ষণ শুরু হল। আমাদের ফের বাঙ্কারে প্রবেশ করতে বলা হল। গতকাল রাত থেকে সেখানেই আছি। নেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল। চারপাশে ইমার্জেন্সি জারি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা চাই দেশে ফিরতে। কিন্তু, কিয়েভে (Kyiv- ইউক্রেনের রাজধানী) সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে। তাই আমরা নিরূপায়। এখানে আমরা প্রায় ৩০০ পড়ুয়া আছি। আমরা সকলেই আমাদের দেশে, বাড়িতে ফিরতে চাই। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমাদের কাতর আবেদন দয়া করে কিছু একটা ব্যবস্থা করুন।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন (২ নং) এর গড়হরিপুরের অনন্যা পাইক শুক্রবার হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলে এই কাতর আর্জিই করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রতি। অনন্যা কিয়েভ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (Kyiv Medical University) এর দ্বিতীয় বর্ষ (চতুর্থ সেমিস্টার) এর ছাত্রী। বেলদা থানার গড়হরিপুরের এই কন্যার জন্য বাড়িতে কেঁদে ভাসাচ্ছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদেরও কাতর আবেদন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে তাঁদের এবং তাঁদের মতো শতাধিক পরিবারের সন্তানদের ফিরিয়ে আনার জন্য।
অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়নগড় থানার জনার্দনপুরের আর এক ছাত্রী অনিন্দিতা মাইতিও আটকে আছে ইউক্রেনে। সেও মেডিক্যাল পড়তে গিয়েছিল ইউক্রেনের কিয়েভ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (Kyiv Medical University) এ। ষষ্ঠ বর্ষের ছাত্রী নারায়নগড়ের জনার্দনপুরে অনিন্দিতা মাইতি। এখনও অবধি সুরক্ষিত থাকলেও, চরম দুশ্চিন্তা আর অসহায়তার মধ্যে মুহূর্ত কাটছে বাঙ্কারের মধ্যে! পরিবারের সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগ হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কল। বাড়িতে কান্নাকাটি করছেন বাবা-মা, আত্মীয় পরিজনেরা! প্রসঙ্গত, অনিন্দিতার বাড়ি ফেরার কথা ছিল ২৭ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু, হঠাৎ করে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় আর ফেরা হলো না! উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। কাতর আবেদন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, ‘কিছু একটা ব্যবস্থা করুন’! এটাই চাইছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে থাকা প্রায় পাঁচ শতাধিক ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্বিগ্ন পরিজনেরা।