দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর ও কলকাতা, ৮ জানুয়ারি: গত চব্বিশ ঘণ্টায় রাজ্যে কমেছে টেস্টের পরিমাণ। তা সত্ত্বেও বাড়লো সংক্রমণ। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী যেখানে ৬৯ হাজারের বেশি টেস্ট হয়েছিল, সেখানে সংক্রমিত হয়েছিলেন ১৮ হাজার ২১৩ জন। অপরদিকে, আজ, শনিবার সন্ধ্যার বুলেটিন অনুযায়ী গত চব্বিশ ঘণ্টায় টেস্ট হয়েছে ৬৩ হাজার ৫১৮ টি। কিন্তু, সংক্রমণ বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৮০২। গত চব্বিশ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। করোনা মুক্ত হয়েছেন ৮১১২ জন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের আসন্ন পৌর নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে বামফ্রন্ট ও বিজেপি। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে চলছে জনস্বার্থ মামলাও। শুক্রবার শুনানিতে এ নিয়ে রাজ্য সরকার অবশ্য নির্বাচন কমিশনের কোর্টে বল ঠেলেছে! রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোর্টকে জানানো হয়েছে, “এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্বাচন কমিশন নেবে।” তখন কোর্টে উপস্থিত কমিশনের পক্ষের আইনজীবীর মত চাওয়া হয়। কোর্টের কাছ থেকে সময় চায় কমিশনের আইনজীবী। হাইকোর্ট আগামী মঙ্গলবার হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
এদিকে, শনিবার ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তাঁর মতে, আগামী দুই মাস কোনও নির্বাচন হওয়া উচিত নয়! শনিবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে একটি বৈঠক করেন সাংসদ অভিষেক। তার পর বলেন, “কোভিড পরিস্থিতিতে আগামী দু’মাস সব কিছু বন্ধ রাখা উচিত। নির্বাচনও বন্ধ রাখা উচিত। এটা আমার ব্যক্তিগত মত।” বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “২ জানুয়ারি রাজ্য কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে করোনার দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল প্রায় ২৪ শতাংশ। কিন্তু, শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী সংক্রমণের হার কমে হয়েছে ৯.৫ শতাংশ। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের কম হলে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে।” সঙ্গে যোগ করেন, “আগামী ২ মাসে ডায়মন্ড হারবার কোনও রাজনৈতিক সমাবেশ করা যাবে না। করা যাবে না কোনও পুজো বা ধর্মীয় সমাবেশও। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রতিটি ওয়ার্ড এবং পঞ্চায়েত একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।” ডায়মন্ড হারবারের যে এলাকাগুলিতে সংক্রমণের হার বেশি, সেখানে বাড়িতে নিভৃতবাসে (হোম আইসোলেশন) থাকা যাবে না। আক্রান্ত মানুষদের সরাসরি বিচ্ছিন্নবাস কেন্দ্রে (আইসোলেশন সেন্টার) পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান। অন্যদিকে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় সারা দেশেও বেড়েছে সংক্রমণ। ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৯৮৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়। মৃত্যু হয়েছে ২৮৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ৮৯৫ জন।