দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ অক্টোবর: শরীর থেকে বের করা হয়েছে স্প্লিন্টার বা ছররা গুলি। এই মুহূর্তে স্থিতিশীল সন্ধ্যা। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আপাতত চিকিৎসাধীন আছে অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরতা এই কিশোরী। প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর গ্রামীণ থানার টাঙাশোল গ্রামের এই কিশোরী’র ডানহাতে লেগেছিল বন্দুকের ছররা গুলি বা স্প্লিন্টার। সালুয়ার ইএফআর (Esatern Frontier Rifles) ক্যাম্পের ভিতরে থাকা বন্দুক অনুশীলন কেন্দ্র (Firing Ground) থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামে ছিটকে এসেছিল স্প্লিন্টার! বাড়ির সামনে জল আনতে গিয়ে ছররা গুলি বা স্প্লিন্টারের আঘাতে জখম হয় বছর ১৫’র সন্ধ্যা রানী মাহাতো। তারপরই গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে তাকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অস্ত্রপচার করে সেই গুলি বের করা হয়েছে বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে। এই বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, “ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর অনুশীলন চলাকালীন দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটি স্প্লিন্টার বেরিয়ে যায়। তাতে আহত হয় ১৫ বছরের সন্ধ্যা মাহাত। এই মুহূর্তে তার অবস্থা স্থিতিশীল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
এদিকে, সন্ধ্যার বাবা স্বপন মাহাতো থেকে শুরু করে এলাকাবাসীদের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরে আধিকারিকদের এবিষয়ে জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না! এর আগেও ওই ক্যাম্প থেকে ছোঁড়া গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। মারা গিয়েছে একাধিক গবাদি পশু। বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” তবে, ইএফআর আধিকারিকদের সূত্রে জানা গেছে, ওই অনুশীলন কেন্দ্র বা ফায়ারিং গ্রাউন্ডে থাকা প্রাচীরের উচ্চতা আরো বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, সালুয়ার ইএফআর ক্যাম্প থেকে ২ কিলোমিটার দূরে খড়্গপুর গ্রামীণের এই টাঙাশোল গ্রামে এর আগেও বন্দুকের গুলি ছিটকে এসেছিল বলে জানা গেছে। এক মহিলা জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে তাঁর পায়ে লেগেছিল গুলি। গ্রামের এক সমাজকর্মী জানিয়েছেন, “শুধু মানুষ নয়, এর আগে গবাদি পশুর শরীরেও গুলি লেগেছিল। ২ টি গরু মারা গেছে। তাই, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” উল্লেখ্য যে, আজ ওই গ্রামে যখন ঘটনার তদন্তে গিয়েছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা, সেই সময় তাঁদের হাতেও তিনটি গুলি (Bullet) তুলে দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের তরফে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।