দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ জুলাই: পরীক্ষা হয়নি, তাও ফেল! এ কেমন বিচার বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের! প্রতিবাদে উত্তাল একেবারে রাজ্য রাজধানী কলকাতা থেকে শুরু করে মেদিনীপুর-খড়্গপুর কিংবা প্রত্যন্ত গ্রামের বিভিন্ন এলাকা। ফেল করে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের বক্তব্য, অতিমারী পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি! তাহলে, কেন তাদের ফেল করিয়ে দেওয়া হল? মাধ্যমিকে তো ১০০ শতাংশ পাস করানো হয়েছে। তাহলে, উচ্চ মাধ্যমিকে করানো হলোনা কেন! নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল হল মেদিনীপুর-খড়্গপুর। মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের ১১ জন ছাত্রী ফেল করেছে উচ্চ মাধ্যমিকে! প্রতিবাদে রাস্তায় নামল ছাত্রীরা। স্কুলগেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তারা। তাদের অভিযোগ, আতিমারী পরিস্থিতিতে যেখানে সবাইকে পাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, সেখানে কেন তাদের ফেল করানো হলো? এছাড়াও তারা একাদশে ভালো পরীক্ষা দিয়েছে! তারপরও কেন ফেল করানো হলো? তাই অবিলম্বে পাস করাতে হবে, না হলে এখানেই ‘আত্মহত্যা’ করব!তাদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেন তাদের অভিভাবকরাও। যদিও বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্কুলের তরফে পাস করানোর চেষ্টা করা হয়েছিল সকলকেই! বাকিটা সংসদ বলতে পারবে। আর, সকলকে পাস করানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই!
অন্যদিকে, খড়গপুর সিলভার জুবলি হাইস্কুলের ছাত্রদের ফেল করানোর প্রতিবাদে, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মেদিনীপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালো ‘অকৃতকার্য’ ছাত্ররা। ছাত্রদের অভিযোগ, “এমনিতেই কোভিড পরিস্থিতির জন্য আমাদের দু’বছর অপচয় হয়েছে, তার উপর পরীক্ষা না নিয়ে, এভাবে ফেল করিয়ে দেওয়ায় আরও একবছর পিছিয়ে যাবো আমরা! এভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে চলে যাবে।” ছাত্রদের দাবি, সকলকেই পাস করাতে হবে। তবে, সবথেকে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হলো, খড়্গপুর শহরের ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতন স্কুলে। নম্বর কম পাওয়া ও ফেল করানোর প্রতিবাদে বেনজির বিক্ষোভ ও ভাঙচুর হলো বিদ্যালয়ে। যার জেরে বন্ধ হয়ে যায়, একাদশ শ্রেণীর ভর্তি প্রক্রিয়া। স্কুলের আসবাব বাইরে এনে চালানো হয় ভাঙচুর। তাদের অভিযোগ অন্যায় ভাবে ফেল করানো হয়েছে! নম্বরও কম দেওয়া হয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা স্কুল চত্বরের বাইরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় পুলিশকে। এছাড়াও, মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল, বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ (বালক) প্রভৃতি নামকরা স্কুলগুলোতেও ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক-অভিভাবিকারা বিক্ষোভ দেখান নম্বর কম দেওয়ার কারণে! তবে, বিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁদের পক্ষে যতটুকু করার তাঁরা তা করেছেন। বাকিটা তাদের “হাতের বাইরে” ছিল!