দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুলাই: পরিবারের একমাত্র রোজগেরে! বাবা, মা ও দাদার মৃত্যুর পর, দাদার পরিবারেরও দায়িত্বও সামলাচ্ছিলেন। সঙ্গে নিজের পরিবার। এরকম এক অসহায় পরিবারের একমাত্র ভরসা সুভাষের দু’টি পা-ই বাদ গেল মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায়। কলকাতার পিজি বা এস এস কে এম (SSKM) হাসপাতালে এখন তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুরের ঘটনা। শুক্রবার দুপুরে, সাইকেলে করে মালঞ্চ থেকে নিজের ছোট দোকানের মাল নিয়ে ফিরছিলেন সুষমাপল্লীর (১১ নং ওয়ার্ড) বাসিন্দা সুভাষ সিনহা। মালঞ্চ কনকদুর্গা মন্দিরের কাছে একই দিকে যাওয়া একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ভর্তি ট্রাকের সঙ্গে তাঁর সাইকেলের ঠোকা লাগে। সাইকেল উল্টো দিকে পড়ে যায়, আর সুভাষ একেবারে ট্রাকের চাকার নিচে! তাঁর দু’টি পায়ের উপর দিয়ে চলে যায় ট্রাক। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে স্থানীয়রা তাঁকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে কলকাতায় রেফার করা হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সুভাষের দু’টি পা-য়ের নিচের অংশই বাদ দিতে হয়েছে!
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর পঞ্চাশের সুভাষ সিনহা অত্যন্ত কর্মঠ ও সৎ মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি ছিলেন। নিজের সংসারের সাথে সাথে, বছরখানেক আগে মৃত দাদার সংসারের দায়িত্বও নিয়েছিলেন। আগে বাইকে করে দোকানের মাল বা সামগ্রী আনলেও, পেট্রোলের অতিরিক্ত দাম বাড়ার কারণে, মাসখানেক ধরে সাইকেলে করেই মাল নিয়ে আসতেন। সাইকেলের হ্যান্ডেলে অতিরিক্ত মাল থাকার কারণেই হয়তো আজ দুপুরে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! এই মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সুভাষ। শোকস্তব্ধ পুরো এলাকা। পুলিশ ওই ট্রাকের চালক ও খালাসি’কে আটক করেছে! তবে, এই মুহূর্তে সকলেই শোকে মুহ্যমান। সুভাষের প্রতিবেশীরা বলছেন, “এই ক’মাসে সাইকেলটাই সুভাষের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছিল! তবে, সেই সাইকেলেই হয়তো সে আর কোনদিন পা রাখতে পারবেনা।” কিভাবে চলবে তাঁদের সংসার, দুঃশ্চিন্তায় সকলে।