thebengalpost.in
অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে :

মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ জুন: কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় যে ৬ টি পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট (Pressure Swing Adsorption Oxygen Plant) তৈরি হওয়ার কথা ছিল, তা আপাততো স্থগিত হয়ে গেছে! কিন্তু, অতিমারী আবহে জেলায় অন্তত একটি লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট (Liquid Medical Oxygen Plant) তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর, তা হচ্ছে জেলা সদর হাসপাতাল তথা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেই। বুধবার সন্ধ্যায় এই বিষয়ক একটি নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে প্রশাসন সূত্রে। এদিকে, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়েছিল একটি ম্যানিফোল্ড রুম বা অক্সিজেন জেনারেটর সিস্টেম তৈরি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, “দুটি কাজই শুরু হয়েছে। আশা করা যায় দ্রুত তা সম্পন্ন হবে।” সূত্রের খবর অনুযায়ী, রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দপ্তর (সিভিল) এর পক্ষ থেকে আপাতত স্ট্রাকচার বা কাঠামো তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। লিক্যুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির কাজ করবে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দপ্তরের মেকানিকাল বিভাগ। এই বিষয়ে জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, “রাজ্যের নির্দেশ এসে পৌঁছেছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মিত হবে। কাজ শুরু হয়েছে।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের MRI বিল্ডিংয়ের সামনে এই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

thebengalpost.in
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও শিশু ওয়ার্ড তৈরির কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যে প্রেসার সুইং অ্যাডজর্পশন অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির কথা ছিল, সেখানে বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে, একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বিশেষ ট্যাঙ্কে ভরা হতো। তা অটোমেটিক্যালি বা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি হয়ে যেত। আপাততো সেই ধরনের ৬ টি প্রকল্পই (মেদিনীপুর ২ টি, শালবনী, ঘাটাল, ডেবরা ও খড়্গপুরে ১ টি করে) স্থগিত হয়ে গেছে কোনও এক অজানা কারণে! রাজ্য সরকার যে লিক্যুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট (Liquid Medical Oxygen Plant) তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যালে, সেক্ষেত্রে একটি বড় ট্যাঙ্কে লিক্যুইড অক্সিজেন এনে মজুত করা হবে। সেই তরল অক্সিজেন’ কে গ্যাসে পরিণত করে সেন্ট্রাল পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হবে। রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ নিমাই চন্দ্র মন্ডল দু’জনই জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে লিক্যুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মিত হচ্ছে। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ।

এদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিধান ব্লকে (ওল্ড বিল্ডিং) নতুন যে ১০০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড তৈরির কাজ চলছে, সেখানে আপাততো ম্যানিফোল্ড রুম থেকে কন্ট্রোল প্যানেলের মাধ্যমে সেন্ট্রাল পাইপ লাইনের সাহায্যে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য দ্রুততার সঙ্গে কাজ চালানো হচ্ছে বলেও মেডিক্যাল কলেজ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। অত্যাধুনিক ওই করোনা ওয়ার্ডে NICU (নিকু বা Neonatal Intensive Care Unit) এবং PICU (পিকু বা Pediatric Intensive Care Unit) মিলিয়ে মোট ২৫ টি শয্যা থাকবে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু। স্বাভাবিকভাবেই, করোনা’র তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সারা জেলার শিশু-চিকিৎসার ক্ষেত্রে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল যে বড় ভরসা হয়ে উঠতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।

thebengalpost.in
অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে :