দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জুন: সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বার্তা দিয়েছিলেন, “করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, কিন্তু দেশ থেকে পুরোপুরি চলে যায়নি। তাই, কোভিড প্রটোকল মেনে চলুন।” বাস্তবে দেখা গেল, কেন্দ্রীয় সরকারের রেল কর্তৃপক্ষই ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট বা বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লংঘন করে প্রায় ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনাটি দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের খড়্গপুর ওয়ার্কশপের। রেল ওয়ার্কশপের এই ধরনের বিধিভঙ্গের কারণে ইতিমধ্যেই খড়্গপুরের মহাকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি। বুধবার মহকুমাশাসক আজমল হোসেন জানিয়েছেন, “অভিযোগ এসেছিল। আমরা খতিয়ে দেখেছি, অভিযোগের সত্যতা আছে। এভাবে কর্মীবৃন্দ থেকে পুরো খড়্গপুর শহরকে বিপদে ফেলা উচিত নয়। তাছাড়া, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লংঘন করা হয়েছে। তাই, আমরা রেলওয়ের চিফ ওয়ার্কশপ ম্যানেজারকে এর কারণ দর্শানোর (শো-কজ) নির্দেশ দিয়েছি।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনা রুখতে রাজ্য সরকারের কড়া বিধিনিষেধ এখনও জারি আছে। কোভিড বিধি মেনে সীমিত সংখ্যক কর্মী নিয়ে স্যানিটাইজেশন সহ জরুরি কিছু কাজের উপর ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, রেলের ওয়ার্কশপে এইরূপ কোন বিধি-নিষেধ মানা হচ্ছে না বলে রেল কর্মীরাও অভিযোগ জানিয়েছেন। কার্যত নজিরবিহীন ভাবে আইএনটিটিইউসি’র অভিযোগকেই সমর্থন জানিয়েছে, আর এস এস প্রভাবিত রেলের শ্রমিক সংগঠন ডিপিআরএমএস। সংগঠনের নেতা প্রহ্লাদ সিংহ জানিয়েছেন, “রেল ওয়ার্কশপ যদি এই ধরনের কাজ করে থাকে তা অন্যায়। কেন্দ্র ও রাজ্যের কোভিড বিধি মেনে চলা উচিত।” আইএনটিটিইউসি’র খড়্গপুর শহর সভাপতি তপন সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, “মে মাসে রেলের ওয়ার্কশপ বন্ধ ছিল। হঠাৎ করে ১ লা জুন থেকে পুরোদমে ওয়ার্কশপ চালু করে দেওয়া হয়েছে। অথচ, রাজ্য সরকারের কোভিড বিধিনিষেধ ১৫ ই জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তাই, মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম।” এদিকে, গত ৩ দিনে খড়্গপুর শহরে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন- খড়্গপুরে ১৬২ (৭৯, ৪০, ৪৩) জন। এর মধ্যে, রেল সূত্রে প্রায় ৩০ জন। লকডাউনের মধ্যেও যদি ৩০ জন রেলকর্মী করোনা আক্রান্ত হন, তবে ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করলে যে তা আরও বাড়বে, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং রেলকর্মীরা। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রেলের চিফ ওয়ার্কশপ ম্যানেজার বিজয় কুমার রথ বলেছেন, “এসব যাঁরা বলছেন ভুল বলছেন। আমরা রেল বোর্ডের গাইডলাইন মেনে ও কোভিড বিধি পালন করে ন্যূনতম কর্মী নিয়ে কারখানা চালাচ্ছি। স্যানিটাইজেশনের কাজ হচ্ছে এবং অক্সিজেন পরিবহন হচ্ছে। জরুরী পরিষেবা দেওয়ার জন্যই আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।”